দুই সিটির ভোট নিয়ে সেই পুরানো শঙ্কা
দেশের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি গত নির্বাচনগুলোতে ভোট দিতে পারেননি। ভোটকেন্দ্রে সাধারণ ভোটারদের উপস্থিতিও ছিলো কম। এবার ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়েও সেই পুরনো শঙ্কা। এ নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটের আগের পুরনো স্টাইলগুলো আবারো দেখা যাচ্ছে।
নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রার্থীদের ধরে নিয়ে যাওয়া, প্রার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করা, নানাভাবে হয়রানি করা, সরকারবিরোধী প্রার্থীদের অভিযোগ আমলে না নেয়া। এ দৃশ্যগুলো অব্যাহত থাকলে এবার সিটি ভোটেও ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন না।
এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে বিশ্লেষকদের আহ্বান— তারা যদি দুটো জিনিসের নিশ্চয়তা দিতে পারেন— প্রথমত, সকল প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন এবং দ্বিতীয়ত. ভোটের পরিবেশ তৈরি করবেন, তাহলে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে।
ভোট না দেয়ার অনাগ্রহ থেকে বেরিয়ে আসা যাবে। ভোটাররা উৎসব-আমেজে কেন্দ্রে যাবেন। তবে অন্য বিশ্লেষকদের এও দাবি— ভোটার উপস্থিতি প্রার্থীদের যোগ্যতা এক্টিভিটিসের ওপর নির্ভর করবে। প্রার্থীদের যোগ্যতা যদি কম থাকে বা এ নিয়ে প্রশ্ন থাকে, তাহলে ভোটার উপস্থিতি কম থাকতেই পারে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে সিটি নির্বাচনের ভোটের পরিবেশ এখন থেকে তৈরি করতে হবে।
কিন্তু সেটি তো এখনকার কমিশন করছে বলে মনে হচ্ছে না। আমরা দেখছি, একজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, আরেকজনকে দৌড়াচ্ছে, অন্য প্রার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করছে। এমন পরিবেশের মধ্য দিয়ে তো একটা ভোটের পরিবেশ তৈরি হতে পারে না।
আর ভোটের পরিবেশ এখন থেকে তৈরি করতে না পারলে ভোটাররাও আগের মতো কেন্দ্রে যাবেন না। ভোট না দেয়ার অনাগ্রহী পরিবেশ আরো বৃদ্ধি পাবে।’
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে ভোটের পরিবেশ আছে নাকি! আমিও তো আমার ভোট দিতে পারেনি। সামনে পারবো কি-না, সেটাও জানি না।
তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ আরো অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আছেন, তারা এ নিয়ে বলবেন। আমি অর্থনীতি নিয়ে বলবো, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অবস্থাও ভয়ঙ্কর।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘অতীতে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ভালো হয়নি। ভোটার উপস্থিতি একেবারেই কম ছিলো। এবারো আশঙ্কা করা হচ্ছে, কম হতে পারে। এখন পর্যন্ত ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। আমি নির্বাচন কমিশনকে দুটি পরামর্শ দেবো। তারা যদি এটি নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলে ভোটার উপস্থিতি এবার সিটিতে বাড়তে পারে।
প্রথমত. তাদের সকল প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্বিতীয়ত. ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এটা যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে পারে। ভোট না দিতে পারার শঙ্কাটা দূর হতে পারে।’