‘জাতীয় সরকার’ নির্বাচনের আগে হলে শেখ হাসিনা মেনে নেবেন: গয়েশ্বর

0

নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার হলে শেখ হাসিনা মেনে নেবেন বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

নির্বাচনের আগে ও পরে জাতীয় সরকারের চলমান আলোচনার মধ্যে মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেছেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে এলডিপি’র উদ্যোগে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন ও আলোচিত জাতীয় সরকার’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনা সভায় দলটির একাংশের সভাপতি আব্দুল করিম আব্বাসীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় দলের সভাপতি এহসান হুদা, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতউল্লাহ প্রমুখ।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে আহ্বান জানিয়েছেন কেউ কেউ বুঝতে না পারলেও সরকার ঠিকই বুঝতে পেরেছে। এ জন্য সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যারা নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকারের কথা বলে মাঠে নেমেছেন তাদের ভাবতে হবে কোনটা সঠিক। তারা তো কোনো রূপরেখা দেননি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার হলে তো সব দল নিয়ে হয়। আমার তো মনে হয় শেখ হাসিনাও এই জাতীয় সরকার মেনে নেবে। এটা শেখ হাসিনা মাঠে ছাড়ছে কিনা তাও তো ভাবনার বিষয়। এই সরকারের ১৪ বছরের অপকর্ম, আবার যদি শেখ হাসিনার অধীনেই জাতীয় সরকার হয় তাহলে সে তো নোবেল পুরস্কার পাবে। সরকারের অতীতের সব অপকর্ম এই জাতীয় সরকার দিয়ে জায়েজ করে নেবে।

যারা নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকারের কথা বলেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যদি শুনে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় নেই, তাহলে যারা যারা সরকারে থেকে অপকর্ম করেছে তারা পালাবার পথও খুঁজে পাবে না। যারা এখন সরকারের চাটুকারিতা করছে তারা তখন আমাদের খুঁজবে। শুধুমাত্র খালি হাতে নয়; উপঢৌকন নিয়ে খুঁজবে। তারা সবাই তখন জ্যান্ত লাশ হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান যে ফর্মুলা দিয়েছেন, তা ট্রাম্পের ওপর ওভার ট্রাম্প। তিনিও বলেছেন জাতীয় সরকার হবে; তবে তা নির্বাচনের পরে। এখন বাজার মন্দা, দিন দিন সরকার ও সরকারের চাটুকারদের দরপতন হচ্ছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের সবার মূল লক্ষ্য হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন। বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা ভোটের রাজ্যে বারবার প্রমাণ করেছে জনগণ তথা ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এক কথায় তারা প্রতারক। পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় তারা লুটপাট করে অর্থনীতিকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছে। উন্নয়নের কথা বলে ৭০ ভাগ টাকা তারা লুট করেছে, তারা গত ১২ বছরে ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।

তিনি আরও বলেন, এই কারণে একের পর এক ভ্যাট, ট্যাক্স ও ইউটিলিটি পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে সরকার। এতে করে প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। মানুষের আয় কমছে, ব্যয় বাড়ছে।

তৎকালীন পাকিস্তান সামরিক জান্তা সরকারের চেয়েও ভয়াবহ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন— এটা জিয়াউর রহমানের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল। তৎকালীন অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শপথ নেওয়ার পর তাজউদ্দীন আহমেদও দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সামনে বলেছিলেন, যুদ্ধ চলছে মেজর জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আবার ৫০ বছর পর তারই সন্তান আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতির প্রয়োজনে ভোটাধিকার ও রাষ্ট্র মেরামত করতে একটি ফর্মুলা জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। যা সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে। তারপরও সবাইকে নিয়ে সরকার গঠনের কথা বলেছে বিএনপি। তারেক রহমান ক্ষমতার জন্য ক্ষুধার্ত নয়, তিনি বিএনপির নেতৃত্বে দেশটাকে গণতান্ত্রিক ট্র্যাকে আনতে চান।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com