জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে হয়রানি বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ
জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে নাগরিকদের হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে কয়েক কোটি মানুষের জন্মনিবন্ধন তথ্য সার্ভারে নেই- এমন অভিযোগ অনুসন্ধান/তদন্তে পাঁচদিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে নোটিশে।
সোমবার (৪ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ সরকার এলজিআরডি সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ চারজনকে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশ অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তানভীর আহমেদ।
নোটিশে গত ১২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে নাগরিকরা’ এবং ৪ ফেব্রুয়ারি বিবিসি বাংলায় ‘জন্মসনদ: বাংলাদেশে কয়েক কোটি মানুষের জন্মনিবন্ধন তথ্য সার্ভারেই নেই’ শীর্ষক প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০৪ সালে জন্মনিবন্ধন আইন করা হয়, কার্যকর হয় ২০০৬ সালে। পাসপোর্ট ইস্যু, বিবাহ নিবন্ধন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়া, জমি রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে জন্মনিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক। শুরুতে হাতে লেখা সনদ দেওয়া হতো।’
‘এরপর ২০১০ সালের শেষ দিকে এসে তা ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত নিবন্ধকদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য সরকার আলাদা বরাদ্দও দেয়। কিন্তু সে সময় সব তথ্য ডিজিটাল করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জনবসতি বেশি এমন এলাকাগুলো, বিশেষ করে সিটি করপোরেশনে তথ্য হালানাগাদ পুরোপুরি হয়নি।’
‘২০১০ সালের পর যে সার্ভারে কাজ করা হতো, তা বছরখানেক আগে পাল্টানো হয়। নতুন এই সার্ভারেও আগের সার্ভারের সব তথ্য স্থানান্তর হয়নি বলে জানান সিটি করপোরেশনের একজন কর্মকর্তা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে। পুরোনো সনদ এখন আর কোনো কাজেই আসছে না। নতুন করে সনদ নিতে হচ্ছে।’
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে জন্মনিবন্ধন করে সনদ নিয়েছেন এমন কয়েক কোটি মানুষকে এখন সম্পূর্ণ নতুন করে অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করাতে হবে। কারণ তাদের আগের নিবন্ধন তথ্য গায়েব হয়ে গেছে।’
‘এসব ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন অনলাইনে আপডেট করা হয়নি এবং এখন নতুন সার্ভারে আর পুরোনো তথ্য স্থানান্তর করা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি স্কুল শিক্ষার্থীদের একটি বিরাট অংশের আবার একাধিক অনলাইন জন্মনিবন্ধনের ঘটনাও বেরিয়ে এসেছে, যা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।’
বাংলাদেশে এখন প্রায় চার কোটি স্কুল শিক্ষার্থীর জন্য ডিজিটাল ইউনিক আইডি তৈরির কাজ চলছে। যার জন্য জন্মসনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘নতুন নিয়মে শিক্ষার্থীদের জন্মসনদের আবেদন করতে হলে তাদের বাবা-মায়েরও তাদের জন্মসনদ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে বহু অভিভাবক দেখছেন যে তাদের আগে নেওয়া জন্মসনদ এখন আর সরকারি সার্ভারে প্রদর্শন করছে না।’