‘টিসিবির ট্রাকের পেছনে জনগণ যখন লাইন দিচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী তখন গান শুনছেন’

0

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা, টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছেন, ঠিক সেই সময় আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে শিল্পী এনে কনসার্টে নিজে গিয়ে গান শুনছেন। যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

গতকাল বুধবার (৩০মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব কনফারেন্স হলে সম্প্রতি কারামুক্ত সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে রুহুল আমিন গাজীর আপোষহীন মনোভাব দেখেছি। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার্থে, গণতন্ত্রকে রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ করে আপনাদের লেখার স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তিনি আপোষহীন।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের অত্যাচার-নির্যাতন আজকে নতুন না। যারা ক্ষমতায় থাকেন তারা সুযোগ পেলেই যারা সত্য কথা লেখেন, তাদেরকে পাকড়াও করার চেষ্টা করেন। তাদেরকে নির্যাতন করেন, কারাগারে নিক্ষেপ করেন, অনেক সময় তাদেরকে কেটে টুকরা টুকরা করে দেন। এমনও হয়েছে জামাল খাসগির মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হচ্ছে। আমি দেখলাম যে কয়েকজন সাংবাদিক এরই মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন। আমাদের দেশে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে এখন একটি ভয়াবহ অবস্থা চলছে। এখানে প্রফেসর আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী  আছেন, আমাদেরতো অনেক বয়স হয়েছে, কিন্তু এত খারাপ অবস্থা আমরা আগে কখনও দেখিনি। যেখানে কোনো প্রকার গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, ন্যূনতম স্বাধীনতাবোধ নেই। যারা চাকর তারা যদি মালিক বনে যায় তখন তো দেশের এ অবস্থা হবেই।

তিনি বলেন, আজকে দেশে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছেন। কারণ নিত্যপণ্যের দাম এতো বেড়েছে যে চাল, ডাল কেনার টাকা তাদের কাছে নেই। আর সেই সময় আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে শিল্পী এনে কনসার্টে নিজে গিয়ে গান শুনছেন। যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আমাদের দেশের সরকারি কর্মকর্তারা টরেন্টো ফ্লাইটে করে বাইরে যাচ্ছেন। সেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।

ন্যায্যমূল্যে কার্ড দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে গলা উঁচিয়ে বলা হচ্ছে এক কোটি ন্যায্য মূল্যের কার্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজকে পত্রিকায় দেখলাম আমার ঠাকুরগাঁয়ে যাকে কার্ড দেওয়া হয়েছে তিনি আওয়ামী মহিলা লীগের সভানেত্রী। তার দোতলা বাড়ি আছে। কিন্তু তার পাশেই একজন দুস্থ-গরিব মানুষ তিনি কোনো কার্ড পাননি। দেশের এই অবস্থায় গাজী ভাই ১৭ মাস জেলে ছিলেন। আমি কিন্তু খুব অবাক হইনি। তিনি কিন্তু অন্যকোনো কারণে না, একটা ভয়ানক অপরাধ করেছেন। অপরাধ কি? একজন ব্যক্তি যাকে প্রভু মনে করা হচ্ছে তার সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন। এটাতো বড় অপরাধ।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের ধন্যবাদ জানিয়ে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী বলেন, বিএনপি মহাসচিবসহ যারা আমার খোঁজ-খবর রেখেছেন আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমার জন্য অনেকে নফল রোজাও রেখেছেন। আমি তাদের এই অনুভূতির যোগ্য কিনা জানি না। তবে ১৭ মাস এভাবে জেল খাটা একটি ইতিহাস। আজ থেকে সাংবাদিকদের মধ্যে আর কোনো বিভক্তি থাকবে না। যারাই বিভক্তির চেষ্টা করবে তাদের প্রতিহত করা হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com