৩০শে ডিসেম্বর এবং ৫ই জানুয়ারির মত কলংকিত দুটি দিনকে সামনে রেখেই নির্ধারণ করা হলো।
বন্দুকটা কেন আদালতের ঘাড়ে রেখে?
ডক্টর তুহিন মালিক
আগামী ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি হিন্দু সম্প্রদায়ের সরস্বতী পূজা। অথচ ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন দিয়েছে ইসি। অথচ ইসি সরকারের সাথে পরামর্শ করেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করার কথা। তাছাড়া ইসি নির্বাচনী তফসিল ও নির্বাচনের সামগ্রিক আয়োজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়সহ প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই করার কথা। এমনকি সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনাও করার কথা। তার মানে ইসি নিশ্চয়ই সরকারের সাথে আলোচনা করেই পূজার দিনে নির্বাচন দিয়েছে।
অথচ, যেখানে দক্ষিণ সিটিতে ব্যাপক সংখ্যক সনাতন ধর্মালম্বী লোকের বসবাস। যেখানে সনাতন ধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ পূজা মণ্ডপগুলোও সেখানে অবস্থিত। ঢাবির জগন্নাথ হল ওই এলাকাতে অবস্থিত। আর যেখানে আমাদের সংবিধানে প্রত্যেকটি নাগরিকের তার নিজের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া আছে। সেখানে ইসির এহেন সিদ্ধান্ত সংবিধানের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিনেই বা কেন ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারণ করা হলো? আর সরকার জেনেশুনেই বা কেন পূজার দিনে নির্বাচন করতে গেলো?
আসলে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের তফসিল হঠাৎ করেই সময়ের আগেই ঘোষনা করা হলো। দেখুন, মনোনয়ন পত্র দাখিল, প্রত্যাহারের দিনক্ষণগুলো ৩০শে ডিসেম্বর এবং ৫ই জানুয়ারির মত কলংকিত দুটি দিনকে সামনে রেখেই নির্ধারণ করা হলো। যাতে মানুষ সিটি নির্বাচনের ডামাঢোলে এই দুটি কলংকিত নির্বাচনের কথা ভুলে যায়। আর রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের মাঠে ব্যস্ত রেখে মিডনাইট নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকেও দূরে সরিয়ে রাখা যায়। এখন ইসি এবং সরকার হুট করে যদি তারিখ পরিবর্তন করে। তাহলে জনগণের কাছে তাদের এই চাতুরতা প্রকাশ পেয়ে যাবে। তাই সাপও মরবে, লাঠিও ভাংবেনা। আদালতের ঘাড় তো প্রস্তুত রয়েছেই। আর খুব স্বাভাবিক ও ন্যায্যভাবেই পূজার দিন কোনভাবেই ভোট হতে পারে না। তাই নিশ্চিতভাবেই নির্বাচন পেছাবে। সবই সরকারের কৌশল মত। আর বরাবরের মত বন্দুকটা কিন্তু আদালতের ঘাড়ে রেখেই।
ডক্টর তুহিন মালিক
আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ