শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে গণর্ধষণ: ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিসহ গ্রেফতার ৩
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নবম শ্রেণির এক স্কুল শিক্ষার্থীকে দু’দিন আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনায় তারাবো পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার গর্ন্ধবপুর এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে তৌসিফ, কর্ণগোপ এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আফজাল ও রূপসী প্রধান বাড়ি এলাকার আবুল কালামের ছেলে তারাবো পৌরসভা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সোহান।
ধর্ষণের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানা পুলিশ শনিবার দিবাগত রাতে দু’জনকে এবং রোববার (১২ জানুয়ারি) সকালে একজনকে গ্রেফতার করে।
এর আগে ধর্ষিতা শিক্ষার্থীর বাবা বাদি হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরোও ২/৩ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) রফিকুল হক জানান, এই ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়ের হওয়ার পর শনিবার রাতে আসামি তৌসিফ ও আফজালকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে রোববার বেলা ১১টার দিকে মামলার প্রধান আসামি তারাবো পৌরসভা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সোহানকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
মামলার বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন, তার মেয়ে গন্ধর্বপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী। গত কয়েকদিন আগে একই এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে তৌসিফ তার মেয়ের কাছ থেকে ৫শ’ টাকা ধার নেয়। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে গন্ধর্বপুর বাসস্ট্যান্ডে তার মেয়ে ধারের টাকা ফেরত আনতে যায়। পরে টাকা ফেরত নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তৌসিফ, আফজাল, তারাবো পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সোহান ও তানভীরসহ অজ্ঞাত ২/৩ জন তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে রূপসী এলাকার একটি বাড়িতে ও কর্নগোপ এলাকার একটি বাড়িতে তারা দুদিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। টানা দুদিন ধর্ষণের পর শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মৌচাক এলাকায় ধর্ষিতাকে ফেলে রেখে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তার পরিবারের লোকজন তাকে মৌচাক এলাকা থেকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তারাবো পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সোহানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে রোববার দুপুরে উপজেলার গর্ন্ধবপুর এলাকায় ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী ও গর্ন্ধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, অপরাধীরা যে দলেরই হোক না কেন তারা কেউ পার পাবে না। আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবো।