এক ভ্যানচালককে বাসায় এনে বলাৎকারের অভিযোগে রংপুরের পীরগাছা থানার এসআই স্বপন কুমার রায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়। অসুস্থ ওই ভ্যানচালককে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পীরগঞ্জ থানার ওসি সরেষ চন্দ্র জানান, ওই ভ্যানচালককে নিজের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে বলাৎকার করে পীরগাছা থানার এসআই স্বপন কুমার রায়। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা নিশ্চিত হওয়ায় তাকে বৃহস্পতিবার রাতে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে রাখা হয়। শুক্রবার বিকেলে ওই ভ্যানচালকের ভাই আজিজুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে বলাৎকারের মামলা দায়ের করলে পুলিশ লাইন থেকে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও তার ভাড়া বাসা থেকে ভুপতি রায় নামের আরেকজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে বিকেলে এসআই স্বপন রায়ের বিচারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে এলাকাবাসী। এর আগে বেলা সাড়ে ৪টায় তারা পীরগাছা বাজারের চারমাথায় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এসআই স্বপন রায়ের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়। ২০ দিন আগে তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ডেলিভারির জন্য গ্রামের বাড়িতে গেছেন। এই সুযোগে পীরগাছার কলেজ রোডে স্বর্ণব্যবসায়ী রিপন রায়ের ভাড়া বাড়িতে স্বপন রায় বিভিন্ন বয়সী পুরুষদের হুমকি দিয়ে নিয়ে আসতেন এবং তাদের বলাৎকার করতেন। বুধবার রাতে উপজেলার শুখানপুকুর এলাকার এক ভ্যানচালককে (৫০) হুমকি দিয়ে ওই বাড়িতে নিয়ে যায় এসআই স্বপন রায় এবং তাকে উপর্যুপরি বলাৎকার করে। এক পর্যায়ে পায়ুপথ দিয়ে তার প্রচুর রক্তপাত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ভ্যানচালককে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শুরুর দিকে বিষয়টি থামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও তা ঢোপে টেকেনি।
এদিকে এ ঘটনার পর শুক্রবার বেলা ১১টায় এসআই স্বপন রায়ের ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান বাসার তালা ভেঙ্গে ভুপতি চন্দ্র রায় (৪৮) নামের আরেকজনকে উদ্ধার থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে তোলপাড় চলছে।
ওই ভ্যানচালকের স্ত্রী বলেন, ‘আমার সহজসরল স্বামীকে ভাড়ার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে তার সর্বনাশ করেছে পুলিশ স্বপন চন্দ্র। আমার স্বামী তার কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনোভাবেই সে ছাড় দেয় নাই। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
ভুক্তভোগীর ছেলে বলেন, ‘পুলিশ আমার বৃদ্ধ বাবার ওপর যেভাবে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে তা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না। সে পুলিশ বলে যেন কোনোভাবেই পার না পায়। তাকে গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।’