নির্বাচনী প্রচারণায় বিজেপি থেকে কম টাকা নেয় ফেসবুক
ভারতে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) সস্তায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে ফেসবুক। ভারতে গত ২২ মাসের ১০টি নির্বাচনে ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের ব্যয় বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। খবর আল জাজিরার।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১০টি নির্বাচনের মধ্যে নয়টিতেই প্রচারণার বিজ্ঞাপনে অন্য দলগুলোর তুলনায় বিজেপির কাছ থেকে কম অর্থ নিয়েছে ফেসবুক। এর ফলে ভারতে ফেসবুকের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ক্লায়েন্ট বিজেপি কম খরচে বেশি ভোটারের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ পেয়েছে, যা নির্বাচনী প্রচারণায় বিরোধীদের চেয়ে তাদের এগিয়ে দিয়েছে।
ভারতভিত্তিক অলাভজনক মিডিয়া সংস্থা দ্য রিপোর্টার্স কালেক্টিভ (টিআরসি) এবং গবেষণা প্রকল্প অ্যাড ডট ওয়াচ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ফেসবুকে দেওয়া ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৭০টি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের ডেটা বিশ্লেষণ করেছে। অ্যাড লাইব্রেরি অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই) ও মেটা প্ল্যাটফর্ম ইনক-এর ‘ট্রান্সপারেন্সি’ টুলের মাধ্যমে এই ডেটা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, একটি বিজ্ঞাপন গড়ে ১০ লাখ বার দেখানোর জন্য বিজেপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো থেকে ৫৪৬ মার্কিন ডলার বা ৪১ হাজার ৮৪৪ রুপি নিয়েছে ফেসবুক। অথচ প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেসকে একই কাজের জন্য ৭০২ মার্কিন ডলার বা ৫৩ হাজার ৭৭৬ রুপি খরচ করতে হয়েছে। অর্থাৎ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য বিজেপির চেয়ে প্রায় ২৯ শতাংশ বেশি খরচ হয়েছে কংগ্রেসের।
টিআরসি ও অ্যাড ডট ওয়াচের বিশ্লেষণ দেখিয়েছে, কীভাবে ফেসবুক বিজেপিকে বিপুল সংখ্যক ভুয়া তথ্য এবং ভালো পণ্যের মোড়কে বাজে জিনিসের বিজ্ঞাপন প্রচারের অনুমতি দিয়েছিল। যদিও বিরোধী দলের নির্মিত একই ধরনের প্রায় সমস্ত বিজ্ঞাপনগুলোই ব্লক করে দিয়েছিল ফেসবুক।
এর আগে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, ফেসবুকের বিতর্কিত ভূমিকা ভারতের নির্বাচনকালীন রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছে। এই বিশ্লেষণ সেই আশঙ্কাকেই বাস্তব রূপ দিচ্ছে।
বিজেপির সঙ্গে ফেসবুকের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে আগে থেকেই অভিযোগ রয়েছে। বুধবার (১৬ মার্চ) সংসদে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী।