ছাত্রলীগের গেস্টরুম নির্যাতনে শিক্ষার্থীদের আতঙ্ক ঢাবির বঙ্গবন্ধু হল

0

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অকথ্য নির্যাতনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল যেন পরিণত হয়েছে শিক্ষার্থীদের আতঙ্কে। গত কয়েকদিনে এখানে ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা কয়েকটি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা ভয়ে হল ছেড়ে দিচ্ছেন অথবা কষ্ট নিয়ে অমানবিকভাবে জীবন যাপন করছেন।

বৃহস্পতিবার আবারো ২০১৮-১৯ সেশনের চার জন ছাত্রলীগ কর্মীর দ্বারা একই হলের ২০১৯-২০ সেশনের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু তালিবকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে। নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ কর্মীরা হলো – সমাজকল্যাণ বিভাগের শেখ শান্ত আলম, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ইমদাদুল হক বাঁধন, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শাহাবুদ্দিন ইসলাম বিজয় ও আইন বিভাগের নাহিদুল ইসলাম ফাগুন।

তারা সবাই বঙ্গবন্ধু হলের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এবং সবাই হল ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্ত’র ছোটভাই হিসেবে পরিচিত। মেহেদী হাসান শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের রাজনীতি করে।

ঘটনার বর্ণনায় নির্যাতনকারীদের সেশনের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বঙ্গবন্ধু হলের ২০১(ক) নম্বর রুমে অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু তালিবকে (ভুক্তভোগী) শান্ত, বাঁধন, বিজয় ও ফাগুন হাতে না ধরে সিগারেটে আগুন ধরিয়ে মুখে দিতে বলে। না দিতে চাইলে পরে একাধিকবার স্টাম্প দিয়ে আঘাত করা হয়। তৃতীয় বর্ষের শান্ত’র (নির্যাতনকারী) সামনে ভিসি চত্বরের পাশে সিগারেট খাওয়ায় এ নির্যাতন করা হয়। এ সময় তারা তালিবের বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করতে থাকে। একইসাথে তাকে হল থেকে চলে যাওয়ার জন্যও বলে।

তৃতীয় বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী গেস্টরুমের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বলেন, আবু তালিবকে এই চারজন সবচেয়ে বেশি প্যারা দেয়। এছাড়াও প্রোগ্রামে উপস্থিত না থাকার অভিযোগে ১০-১২ জন শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেয়া হয় এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য (পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত) ৩০১(ক) নম্বর রুম গত তিনদিন থেকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। ফলে ওই কক্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা থাকা সত্বেও তারা বিভিন্ন হলে ঘুরে ঘুরে রাত কাটাচ্ছেন।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মহিদুল ইসলাম মুকুলকে গত পড়শু ৪০১ নম্বর রুমে নিয়ে টর্চার করা হয়। স্টাম্প ও রড দিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয় সেখানে। এমনকি হাতে ছুরি নিয়েও হুমকি দেয়া হয়।

আর এসব নিয়ে সমঝোতার জন্য একই রাত ২টায় তাকে ডাকা হয় ৩০৪ নম্বর রুমে।

জানা যায়, অভিযুক্ত নির্যাতনকারীরা সবসময় গেস্টরুমে নির্যাতন করে, হারাজ করে। গালি দেয় বাবা-মা তুলে। তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দ্বিতীয় বর্ষের ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে হল ছেড়ে দিয়েছেন। আর এই নির্যাতনগুলো করা হচ্ছে ময়মনসিংহ অঞ্চল ছাড়া বাকি অঞ্চলের যারা আছেন তাদের বেছে বেছে। এমনকি হল ছাত্রলীগের চেইন ভেঙ্গে তথাকথিত গেস্টরুম দ্বিতীয় বর্ষ না নিয়ে প্রথম বর্ষের গেস্টরুমও তৃতীয় বর্ষ নিচ্ছে।

 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com