প্রেসব্রিফিং—
বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ৯, ২০২০, নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এর সংবাদ সম্মেলন।
সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
মিথ্যাচার আর প্রতিহিংসার রাজনীতি শুধুমাত্র বাংলাদেশের গণতন্ত্র, রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক মূল্যবোধকেই ধ্বংস করেনি দেশের সার্বভৌম মর্যাদাকেও প্রশ্নের সম্মুখীন করে তুলেছে। দেশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপি ক্ষমতাসীনদের মিথ্যাচারের রাজনীতির শিকার। ক্ষমতাসীনদের প্রতিহিংসার রাজনীতির নির্মম শিকার হয়ে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আজ প্রায় দুই বছর যাবত কারাবন্দি। সরকারী ষড়যন্ত্রে তাঁকে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁকে পিজি হাসপাতালের কারা প্রিজনে রেখে সুচিকিৎসা না দিয়ে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছে। তাঁকে সম্পূর্ণ অচল করে দেয়া হয়েছে। কোন কিছুই খেতে পারছেন না। কিছু মুখে দিলেই বমি হয়ে উঠে যাচ্ছে। সরকারের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশের কারনে চিকিৎসকদের জরুরী কল দিলেও তারা চিকিৎসা দিতে দেশনেত্রীর রুমে যাচ্ছেন না। তাঁর শরীর ভেঙ্গে পড়েছে। বাস্তবে তাঁর অবস্থা মরনাপন্ন। এক্ষুনি জরুরী ভিত্তিতে মুক্তি দিয়ে তাঁর সুচিকিৎসা না করালে জীবনহানীর আশংকা করছি আমরা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে-শেখ হাসিনা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকে বাদের খাতায় রাখতে উঠেপড়ে লেগেছেন।
সুহৃদ সাংবাদিকবৃন্দ,
দেশের আইন আদালত এখন ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছেপূরণে নগ্নভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় বিচারের নামে অবিচার চলছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে, দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের জনগণের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক, গণতন্ত্র ও নাগরিক স্বাধীনতার প্রতীক বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের যাবতীয় আয়োজন চলছে। নানা তথ্য প্রমান বলছে, বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এযাবৎ যত মামলা-মোকদ্দমা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মিথ্যা, আজগুবে ও হাস্যকর মামলা শুরু হয় ওয়ান ইলেভেনে ক্ষমতা কব্জাকারী অসাংবিধানিক ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের সময়ে। সেই দেশধ্বংকারী তথাকথিত তত্বাবধায়ক সরকারের ষড়যন্ত্রের ফসল হিসাবে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা। প্রহসনের নির্বাচনে ক্ষমতায় বসেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নিজের নামে থাকা ১৫টি মামলা এক ফরমানেই প্রত্যাহার করিয়ে নেন। অথচ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় বিচারের নামে অবিচার চলছে বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।
আদালতকে ব্যবহার করে দুইটি মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার পর এবার আবারও ‘নাইকো দুর্নীতি’ নামে একটি ভুয়া মামলায় বিচারের নামে অবিচারের মহড়া চলছে। কানাডিয়ান কোম্পানি ‘নাইকো’র সঙ্গে গ্যাস নিয়ে তৎকালীন বিএনপি সরকার যে চুক্তি করেছিলো, সেই চুক্তিতে খালেদা জিয়া দুর্নীতি করেছেন এটা প্রমানে মরিয়া হয়ে উঠেছে নিশিরাতের সরকার। এ মামলায় খালেদা জিয়াকে ফাঁসানোর জন্য কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বসানো হয়েছে অস্থায়ী আদালত। দেশে লক্ষ লক্ষ মামলা বিচারাধীন থাকলেও শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে মিডনাইট সরকারের তড়িঘড়ি প্রমান করে তারা আরেকটি ভুয়া অভিযোগে ভুয়া রায় চায়।
সুহৃদ সাংবাদিকবৃন্দ,
আপনারা এরইমধ্যে জেনে গেছেন, নাইকো মামলায় আসলে কোনো দুর্নীতিই হয়নি। ২০১৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি এই রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অফ ইনভেষ্টমেন্ট ডিসপিউটস (আইসিএসআইডি)’র আওতাধীন প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সালিশি ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে বলা হয়েছে কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে গ্যাস নিয়ে তৎকালীন বিএনপি সরকার যে চুক্তি করেছিলো তাতে কোন রকমের দুর্নীতি হয়নি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং অন্যদের বিরুদ্ধে এ মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোন রকমের প্রমান বা ভিত্তি নেই। তবে নাইকো মামলার এই রায় যাতে জনগণ জানতে না পারে এ কারণে শেখ হাসিনার জনম্যান্ডেটহীন সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘আইসিএসআইডি’র ওপর চাপ সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক সালিশ নিষ্পত্তিকারী ট্রাইব্যুনালের রায়ের তথ্য ইচ্ছে করে গোপন রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার।
তবে নাইকো নিয়ে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সালিশি ট্রাইব্যুনালের এই রায়ের ডকুমেন্ট এর ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান সম্প্রতি একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তার সম্পাদিত আলোড়ন সৃষ্টিকারী আন্তর্জাতিক নিউজ মিডিয়া ‘নেট্রা নিউজ’ এ। নাইকো’র চুক্তির কথিত দুর্নীতি নিয়ে ‘নেট্রা নিউজে’র হাতে থাকা ৫৭১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং আরো আটজনের বিরুদ্ধে নাইকো মামলায় দুর্নীতি ও ঘুষ আদান-প্রদানের অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন।
ট্রাইবুনাল থেকে আরো বলা হয়-ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুত্র তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি প্রভাব খাটানো এবং আর্থিক অনিয়মের যে অভিযোগ করা হয়েছে তারো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আইসিএসআইডি এর পক্ষ থেকে বলা হয় বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার মামলার প্রকৃত কোনো তথ্য তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং সরকারের কথার সঙ্গে বেমিল খুঁজে পাওয়া গেছে।
এতে বলা হয়, নাইকোর কাজ পাওয়াটা ছিলো যথাযথ। বৈধভাবেই ছাতক গ্যাসফিল্ডের চুক্তি হয়েছিলো, আর তাতে লাভবান হয়েছিলো বাপেক্স আর পেট্রোবাংলাই। নাইকোর সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশের উৎপাদন নীতিমালার বরখেলাপ হয়েছে এমন কথার যথার্থতা নেই। অন্য সরবরাহকারীদের গ্যাসের জন্য যে মূল্য পরিশোধ করতে হয় তার চেয়ে কম মূল্য বরং পেট্রোবাংলাকে সে সুবিধা দিয়েছে নাইকো।
নাইকোর এই দুর্নীতি মামলায় বরং বর্তমান সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-এ-এলাহির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে বাপেক্স, পেট্রোবাংলা।
‘আইসিএসআইডি’ পরিচালিত ট্রাইব্যুনালে অংশ নেয়া তিন বিচারক হলেন-ট্রাইব্যুনাল প্রেসিডেন্ট মাইকেল ই স্কেনইডার, প্রফেসর ক্যাম্পবেল ম্যাক লেকলান কিউসি এবং প্রফেসর জন পলসন।
এর মধ্যে মাইকেল ই স্কেনইডারকে নিয়োগ দেন মামলার দুইপক্ষ। ম্যাক লেকলানকে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ সরকার আর প্রফেসর জন পলসন ছিলেন কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকো’র পক্ষে।
বন্ধুগণ,
মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছিল, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে খালেদা জিয়াসহ আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) ইন্টারন্যাশনাল এন্টিকরাপশন ইউনিট নাইকো দুর্নীতি মামলা নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালায়। দুর্নীতির বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশ থেকেও। এই তদন্ত পরিচালনায় কানাডা সরকারের ৯ লাখ ডলার ব্যয় হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় এফবিআই ও কানাডা পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে আদালত নাইকো চুক্তি পর্যালোচনা করে। আদেশে ‘আইসিএসআইডি’ বলেছে, নাইকো চুক্তিতে অনুমোদন লাভে নাইকো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ঘুষ দিয়েছে বলে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে সেসবের পক্ষে কোন প্রমাণ নেই। আইসিএসআইডি তাদের রায়ে ২০১৭ সালে নাইকোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের হাইকোর্টের একটি আদেশেরও কড়া সমালোচনা করে বলেছে যে, হাইকোর্টের আদেশটি “অনিষ্পন্ন বা বিতর্কিত প্রমাণ” এবং “সুস্পষ্টভাবে ত্রুটিযুক্ত তথ্যগত দাবীর” ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও হাইকোর্টের আদেশটিতে কোন প্রমাণ ছাড়াই বিভিন্ন অযাচিত বক্তব্য সন্নিবেশিত হয়েছে বলে সালিশি ট্রাইব্যুনাল মন্তব্য করেছে।
আইসিএসআইডির ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দাবী করা হয় যে, নাইকো দুর্নীতির অনেক প্রমাণ সরকারের কাছে আছে. বাংলাদেশ সরকার আরো দাবি করে, নাইকো ও বাপেক্স যৌথ উদ্যোগ জেভিএ চুক্তি এবং নাইকোর কাছ থেকে গ্যাস কেনাবেচা, জিপিএসএ চুক্তিতেও দুর্নীতির মাধ্যমে অনুমোদন করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সালিশি ট্রাইব্যুনাল এই দাবী পুরোপুরি নাকচ করে তাদের রায়ে বলেছে “চুক্তিগুলো প্রণয়ন বা সম্পাদনের ক্ষেত্রে সরকারী পর্যায়ে কোন দুর্নীতি হয়েছে এমন দাবী প্রমাণ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নাইকো একদল দুর্নীতিগ্রস্ত পরামর্শককে নিয়োগ দিয়েছিল, বাংলাদেশের পক্ষে এমন একটি জোরালো অভিযোগও ট্রাইব্যুনাল প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, “দুর্নীতির উদ্দেশ্যে পরামর্শকদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরী করার যে অভিযোগ নাইকোর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তার কোন প্রমাণ ট্রাইব্যুনাল পায়নি।
সাংবাদিক বন্ধুরা,
আপনারা জানেন, নাইকো চুক্তি নিয়ে দুটি মামলা হয়েছিল। একটিতে শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। অপর মামলায় খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে নিজের নামে থাকা নাইকো মামলা প্রত্যাহার করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচারের নামে ক্যাংগারু কোর্ট বসিয়ে প্রহসন করছে।
আমাদের প্রশ্ন হলো, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অফ ইনভেষ্টমেন্ট ডিসপিউটস (আইসিএসআইডি)’র আওতাধীন প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সালিশি ট্রাইব্যুনাল নাইকো চুক্তি নিয়ে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাপারে যে রায় দিয়েছে সেখানে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্বও ছিল। তাহলে কেন সেই ট্রাইব্যুনালের রায় এতদিন প্রকাশ করা হয়নি ? অথচ, আমরা এখন দেখছি, সুইডেনভিত্তিক নিউজমিডিয়া ‘নেট্রা নিউজ’ আদালতের রায়ের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর এখন বাংলাদেশে ‘নেট্রা নিউজ’ সাইটটি বন্ধ বা ব্লক করে দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো কতটুক চাপে আছে এটি তার প্রমান। আল জাজিরার মাধ্যমে দেশের জনগণকে জানতে হচ্ছে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের খবর। আজ যদি দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে এই রায় যেতো তাহলে বাংলাদেশের সরকারের আজ্ঞাবহ মিডিয়াগুলোর ঘুম হারাম হয়ে যেতো।
সুপ্রিয় সচেতন সাংবাদিক বন্ধুরা,
নাইকো দুর্নীতি মামলায় নিরপেক্ষ বিচারের রায় প্রমাণ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা প্রতিটি মামলাই ভূয়া ও নির্জলা মিথ্যা। ওয়ান ইলেভেনের অবৈধ সরকার তাঁকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে দেশবাসীর সামনে তার নিস্কলুষ ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মিথ্যা মামলা দেয়। অপরদিকে বর্তমান অবৈধ সরকার একের পর এক মামলা দিচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরাতে ও প্রতিহিংসাপরায়ণতার বশবর্তী হয়ে। আমরা দেশের মানুষকে শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট দুর্নীতি মামলা, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা, বড়পুকুড়িয়া দুর্নীতি মামলা, নাইকো দুর্নীতি মামলা, অবৈধ সম্পদ সংক্রান্ত মামলা, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, মানহানির মামলা, বিস্ফোরক, হত্যা, নাশকতার মামলাসহ তাঁর নামে যে অর্ধশত মামলা করা হয়েছে সবই মিথ্যা। তারেক রহমানের নামে যত মামলা করা হয়েছে সবই মনগড়া, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এই সরকার মনে করে বাংলাদেশের মানুষের প্রাণশক্তি বেগম খালেদা জিয়া জনগণের মাঝে সক্রিয় থাকলে অপকর্ম করা যাবে না। লুটপাট করা যাবেনা। দেশকে বিদেশীদের কাছে বিক্রি করা যাবে না। ভোট ডাকাতি করা যাবে না। একারণে একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। আর এই মিথ্যা মামলা নিয়ে তারা গভীর চক্রান্ত ও প্রহসন করছে। দুটি মিথ্যা মামলার রায়ে সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে তাঁকে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দী রেখে হত্যা চেষ্টা চলছে।
মিথ্যা আর প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বন্ধ করুন। মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিন। দেশনায়ক তারেক রহমানের নামে যত মিথ্যা মামলা দিয়েছেন প্রত্যাহার করুন।
বন্ধুরা,
আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার এবং সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা জুলুম নির্যাতন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। হুমকি-ধামকি ও অপহরণের মাধ্যমে প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদেরকে এলাকা ছাড়া করা হচ্ছে। হামলা চালিয়ে আহত করা হচ্ছে।
গতরাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মহিলা সংরক্ষিত আসন-৬ এর ১৬, ১৭ ও ২১নং ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ফজলে নুর তাপসের সমর্থকরা জোর করে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ধরে এনে প্রার্থীতা বাতিলে বাধ্য করেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপসের লোকজন বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কথা না শুনলে তাদের বাসাবাড়ীতে পুলিশ পাঠিয়ে পরিবারের সদস্যদেরকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। অবস্থাদৃৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে আবারও ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের মতোই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও প্রহসনের নির্বাচন করতে চায় বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠী।
বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন সরকার তাদের কাঙ্খিত একদলীয় শাসনকে চিরস্থায়ী রুপ দিতে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা, উদ্ভট এবং বানোয়াট মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার ও জুলুম নির্যাতন করছে, এখন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদেরও নির্বাচন থেকে সরাতে জুলুম শুরু করেছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সারাদেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার এবং সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শণ দেশকে এক চরম নৈরাজ্যকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এধরণের নৈরাজ্যকর অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ হাফেজ।