কাশ্মির নিয়ে যৌথ বিবৃতি চীন ও পাকিস্তানের
কাশ্মির নিয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে চীন ও পাকিস্তান।
রোববার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর এই যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে একইসাথে চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্পে আরো ছয় হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের কথা জানিয়েছে চীন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীন এবং পাকিস্তান দুই দেশই চায় কাশ্মির নিয়ে নানা স্তরে আলোচনা হোক। জাতিসংঘের চার্টার মেনে আলোচনার পরিবেশ তৈরি হোক। কাশ্মির সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজে বার করা হোক।
তবে চীন ও পাকিস্তানের এই যৌথ বিবৃতিতের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি।
এর আগেও কাশ্মির সংকটের সমাধানে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল চীন এবং পাকিস্তান। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছিল, কাশ্মির ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফলে অন্য কোনো দেশের সে বিষয়ে কথা বলার অধিকার নেই। শুধু তা-ই নয়, লাদাখ নিয়েও অন্য কোনো দেশ নাক গলাক, ভারত তা চায় না।
বস্তুত, ভারতের বক্তব্য, পাকিস্তান কাশ্মিরের একটি অংশ ‘দখল’ করে রেখেছে। ভারত চায় সেখানে স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক।
চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর অর্থাৎ সিপিইসি পাকিস্তানের কাশ্মীরের ভিতর দিয়ে গেছে। তা নিয়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে ভারতের। ওই অঞ্চলের ভিতর দিয়ে কোনো কিছুই ভারত সহ্য করবে না বলে জানানো হয়েছে আগেই। এবার সেখানেই ৬০ বিলিয়ান ডলার খরচের কথা ঘোষণা করেছে চীন।
এদিকে ভারতীয় পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, চীন এবং পাকিস্তান হাত মিলিয়ে ভারতকে ‘ঘেরার’ চেষ্টা করছে। ভারত সরকার এই বিষয়টিকে কূটনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারছে না। এর ফলে উপমহাদেশে ভারত একঘরে হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন রাহুল।
রাহুলের ওই মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। বিজেপি রাহুলের বক্তব্যের সমালোচনা করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছিল, রাহুল যেভাবে চীন এবং পাকিস্তানের প্রসঙ্গ এনেছেন, তা অভিপ্রেত নয়।
কিন্তু রাহুলের ওই বক্তৃতার কয়েকদিনের মধ্যেই পাকিস্তান এবং চীনের যৌথ বিবৃতি সামনে এলো। বিবৃতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক সমঝোতার কথাও বলেছে চীন। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যেভাবে লড়াই করছে, তার প্রশংসা করেছে চীন। পাশাপাশি পাকিস্তানকে সামরিক সাহায্য দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
সিপিইসি-র কাজ করতে গিয়ে বেশকিছু চীনা কর্মী পাকিস্তানে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান জানিয়েছে ভবিষ্যতে যাতে এমন না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, পাকিস্তান এবং চীন যেভাবে যৌথ বিবৃতি পেশ করেছে, উপমহাদেশের কূটনীতিতে তা যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে