ভারতে মেয়েদের মানুষ বলেই গণ্য করা হয় না: কংগ্রেস
ভারতে গণধর্ষিতা তরুণীকে অপহরণ করে, তার চুল কেটে, মুখে কালি মাখিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তায় হাঁটানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে গত সপ্তাহে।
সোমবার সেই ঘটনার নিন্দায় সরব হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
এদিন তিনি টুইট করে বলেন, “সমাজের এক ভয়াবহ দিক তুলে ধরল ২০ বছর বয়সী নারীকে নিগ্রহের এই ভিডিওটি। আমাদের সমাজের একটা বড় অংশ নারীদের মানুষ হিসেবেই গণ্য করে না। এটা অত্যন্ত তিক্ত একটি সত্য। খুবই দুঃখের সঙ্গে এ কথা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি।”
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনের এই ভয়াবহ ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসেছে দিল্লি পুলিশ। আটজন নারী-সহ নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া, আটক করা হয়েছে তিন নাবালককে।
গণধর্ষিতা প্রসঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার রং লাগিয়ে নানা গুজবও ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। এ ব্যাপারে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, উদ্দেশ্যমূলকভাবেই ছড়ানো হচ্ছে এই গুজব। কোনও ধরনের ভুয়া খবর কেউ ছড়ালে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শাহদারা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার আর সাথিয়াসুন্দরম সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘অসংখ্য ভুয়া খবর চাউর করা হচ্ছে। নির্যাতিতা আত্মহত্যা করেছেন, এমন গুজবও শোনা যাচ্ছে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, এই খবর সর্বৈব ভুল। ওই নারী সুস্থ আছেন।”
পুলিশকর্তা আরও জানিয়েছেন, আইন ভেঙে কেউ যদি ধর্ষিতার পরিচয় প্রকাশ করে, তাহলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন স্বাতী মালিওয়াল নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সোমবার তিনি দিল্লি পুলিশের কাছে আবারও আর্জি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আরও যারা অভিযুক্ত, তাদেরকেও শিগগিরই গ্রেফতার করা হোক। ঘটনায় জড়িত যারা, তাদের অন্য কোনও অপরাধের ইতিহাস রয়েছে, বা তারা কোনও মাদক বা মদ-মামলায় জড়িত কি না, দিল্লি পুলিশের কাছে তা-ও জানতে চেয়েছে মহিলা কমিশন।
রাজনৈতিক নেতা বা মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন, যিনি যতই সরব হন না কেন, উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারতে নারী নিগ্রহের ঘটনা থামছেই না! যৌন নিগ্রহের শিকার হয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় আত্মহত্যা করেছে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী। শহরের ভবানীপুরম এলাকার যে বহুতলে সে থাকত, শনিবার তার ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয় সে। সুইসাইড নোটে সে লিখে রেখে গিয়েছে যে, গত দু’মাস ধরে তাকে যৌন নিগ্রহ করছিল তার এক প্রতিবেশী। অভিযুক্তের নাম ও পরিচয়ও সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছে মেয়েটি। স্থানীয় পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে হনুমন্ত রাও জানিয়েছেন, ৪৯ বছর বয়সি লোকটি মেয়েটির অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সেই থাকে। একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। মেয়েটির দাদার করা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করেছে পুলিশ। তবে এখনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি। সূত্র: আনন্দবাজার