রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা ব্রিটেনের

0

ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্রিটেন। আগামী সপ্তাহেই এ বিষয়ক একটি আইন পার্লামেন্টে তোলা হবে।

রোববার এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেন, মস্কোর ইউক্রেন আগ্রাসন প্রতিরোধের চেষ্টার অংশ হিসাবে রুশ অর্থনীতিকে টার্গেট করে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ভ­াদিমির পুতিনের সাঙ্গপাঙ্গরা একজনও লুকানোর জায়গা পাবেন না।’ তিনি আরও জানান, রাশিয়ার সরকার ও পুতিনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে টার্গেট করে নিষেধাজ্ঞার খসড়া আইন প্রস্তুত করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক চাপের পাশাপাশি সামরিক চাপও অব্যাহত রাখার পক্ষে লন্ডন। ইউরোপে সামরিক উপস্থিতি দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আওতায় কৃষ্ণসাগর (ব্ল্যাক সি) এলাকায় দুটি রণতরী পাঠানো হবে।

এছাড়া রুশ সীমান্তে এস্তোনিয়ায় অতিরিক্ত সেনা ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন, রোমানিয়া ও সাইপ্রাসের বুলগেরিয়া আকাশসীমায় নজরদারি বিমান মোতায়েন করা হবে।

শনিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, সম্ভাব্য সেনা মোতায়নের বিষয়টি ‘ক্রেমলিনকে পরিষ্কার বার্তা দেবে’। এর আগের দিনই পূর্ব ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীগুলোকে ইউরোপজুড়ে মোতায়েন হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছি। জলে, স্থলে ও আকাশে ন্যাটো মিত্রদের সহায়তা করতে আমরা যে সক্ষম তা এর মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করা হবে।’ ইতোমধ্যে ৯ শতাধিক ব্রিটিশ সেনাসদস্য এস্তোনিয়ার ঘাঁটিতে অবস্থান করছে।

এছাড়া আরও একশর বেশি ট্রেনিংয়ে রয়েছে ইউক্রেনে। আর পোল্যান্ডে আছে দেড় শতাধিক। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তাদের আট হাজার সেনা প্রস্তুত রয়েছে। তবে ন্যাটো বলেছে, রাশিয়া আক্রমণ চালালেও ন্যাটোর সদস্য না হওয়ায় ইউক্রেনে কমব্যাট সৈন্য মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। রোববার ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ এই মন্তব্য করেন।

রাশিয়া হামলা চালালে ন্যাটোর সৈন্যদের ইউক্রেনে মোতায়েন করা হবে কি-না, বিবিসি টেলিভিশনের এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘ইউক্রেনে আমাদের ন্যাটোর কমব্যাট সৈন্য মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা নেই… আমরা সহায়তা প্রদানের দিকে মনোনিবেশ করছি।’

তিনি বলেন, ‘ন্যাটোর সদস্য হওয়া এবং ইউক্রেনের শক্তিশালী ও অত্যন্ত মূল্যবান অংশীদার হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।’ ইউক্রেন ঘিরে তৈরি হওয়া ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ব্যাপারে ‘ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতি’ অবলম্বনে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ন্যাটোর এই মহাসচিব।

স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘ইউক্রেনে কমব্যাট সৈন্য মোতায়েনের পরিকল্পনা নেই।’ তিনি বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতি প্রকৃত বিপদ তৈরি করেছে এবং সংশ্লিষ্ট সব দেশের উচিত রাজনৈতিক সমাধানের জন্য কাজ করা।’

গত কয়েক সপ্তাহের তীব্র উত্তেজনার মাঝে ইউক্রেনের সীমান্তজুড়ে এক লাখের বেশি সৈন্য মোতায়েন করেছে রাশিয়া। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদান ঠেকাতে দেশটির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

রাশিয়ার অভিযান ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি গুরুতর তা আঁচ করতে পেরে চলতি সপ্তাহে ইউরোপের পূর্বাঞ্চল সফরে যাচ্ছেন বরিস। এ ছাড়া চলমান সংকট নিরসনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবেন তিনি।

আলাপকালে কূটনৈতিকভাবে সংকট সমাধানের বিষয়ে জোর দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ইউক্রেনে হামলা না করার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করবেন।

তাতেও কাজ না হলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে নিয়ে রাশিয়া যাবেন বরিস। ব্রিটেনের রুশ দূতাবাস থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com