আ.লীগের হুমকিতে নাসিক নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে প্রশ্ন
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নানা রকম অভিযোগ আসছে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে। মেয়রপ্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই এমন অভিযোগ তুলেছেন। এ ছাড়া নেতাকর্মীদের পুলিশ হয়রানি করছে এমন অভিযোগও তার। নানকের বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টা না যেতেই তারা আমাকে ফাঁদ দেখানো শুরু করেছেন। তৈমূরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইভী বলেছেন, প্রত্যেকটা প্রার্থীর ভিতরে শঙ্কা থাকে, আমি তো এর বাইরে কেউ না। আর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, তৈমূর আলম খন্দকারের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নাসিক নির্বাচন নিয়ে পুলিশ জিরো টলারেন্সে আছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তৈমূরের কর্মীদের বাসায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের অভিযোগ প্রশ্নে আইভী বলেন, আমি প্রচারণায় ব্যস্ত এসব জানি না। উনি তো বলেছেন অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করা হোক। বলেছেন পরিবেশটা যেন সুষ্ঠু থাকে, আমিও বলি পরিবেশটা যেন সুষ্ঠু থাকে। চাই না নারায়ণগঞ্জে এমন কোনো সমস্যা হোক। আমার নেতাকর্মীরা ভোট চাচ্ছে এমনকি উনার নেতাকর্মীরাও ভোট চাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকটা প্রার্থীর ভিতরে শঙ্কা থাকে, আমি তো এর বাইরে কেউ না। আমি চাইব নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ যেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ থাকে। প্রশাসন যেন সজাগ থাকে। আমার ভোটাররা যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে। নারায়ণগঞ্জে এর আগেও সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে। আশা করছি এবারো হবে।
তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক সাহেব বলেছেন, ঘুঘু দেখেছেন ঘুঘুর ফাঁদ দেখেননি, ২৪ ঘণ্টা পর টের পাবেন। তার এই বক্তব্যের পর ২৪ ঘণ্টা না যেতেই তারা আমাকে ফাঁদ দেখানো শুরু করেছেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, তারা সর্বক্ষণ বলে থাকে বিএনপি নির্বাচনে আসে না, ভয় পায়। এখন দেখেন রাজনৈতিক দলগুলো কেন নির্বাচন বয়কট করে। কেন তারা আসতে চায় না এর জলজ্যান্ত প্রতিচ্ছবি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। জনগণের রায়ই চূড়ান্ত রায়।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই আমাকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেয়নি। ১৬ ডিসেম্বর ২০ হাজার নেতাকর্মীর একটা বিজয় র্যালিতে আমার সভাপতিত্ব করার কথা ছিল। নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে আমি সে সমাবেশে যাইনি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে বারবার অভিযোগের পরও সরকারি দল এমপি ও বড় বড় নেতাকে এনে উসকানিমূলক ও ভয়ভীতি ছড়ানোর মতো কথাবার্তা বলা হচ্ছে।
তৈমূর বলেন, আমি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি আমার ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, তার বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করেছে। মাজহারুল ইসলাম জোসেফের বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেছে। তিনি যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি আমার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক। তার হাতে দায়িত্ব ছিল এজেন্ট ও নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ পরিচালনা ও সহযোগিতা করা। যখন আমি জানতে পারলাম রবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তৎক্ষণাৎ এসপি অফিসে যাই। তিনি অফিসে নেই। টেলিফোনে বললাম রবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে কেন, তারা বললেন তার নামে ওয়ারেন্ট আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর থেকে রবি প্রকাশ্যে আমার সাথে নির্বাচনী প্রচারণায় রয়েছেন। ওয়ারেন্ট থাকলে তো তখনই তাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারত। এখন কেন করল?
স্বতন্ত্র এই প্রার্থী বলেন, বন্দর থেকে ধামগড় ইউনিয়নের কামাল হোসেন চেয়ারম্যান আমাকে সমর্থন করায় তার বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। তার কেয়ারটেকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবেই আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে পুলিশ। থানায় যখন আমরা খোঁজ নিই তারা বলে আমরা কিছু জানি না। এসপি সাহেবকে বলতে চাই আপনি যদি এর ব্যবস্থা না নেন তাহলে আপনার অফিসের সামনে বসে পড়া ছাড়া আমার অন্য কোনো উপায় থাকবে না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শত শত লোকজন নিয়ে এসপির অফিসের সামনে বসে পড়ব এবং সেখানে বসেই নির্বাচন পরিচালনা করব।