মুক্তি পেলেন সৌদি রাজকুমারী বাসমা বিনতে সৌদ
বিনা অভিযোগে প্রায় তিন বছর ধরে কারাগারে থাকা সৌদি আরবের রাজকুমারী বাসমা বিনতে সৌদ ও তার কন্যা সুহৌদ মুক্তি পেয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (৮ জানুয়ারি) মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা এএলকিইএসটি এ তথ্য জানিয়েছে।
টুইটার পোস্টে এএলকিইএসটি জানায়, রাজকুমারী ও তার কন্যাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অসুস্থতার কারণে তিনি হুমকির মুখে ছিলেন। এরপরও তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে আটক করা হয় ৫৭ বছর বয়সী বাসমা বিনতে সৌদকে। এসময় তিনি চিকিৎসার জন্য সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে কেন তাকে আটক করা হয়েছিল তা জানা যায়নি এবং তাকে বা তার মেয়ে সুহৌদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
গত তিন বছর রাজকুমারী বাসমাকে রাজধানী রিয়াদের কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত আল-হাইর কারাগারে রাখা হয়েছিল। এই কারাগারে রাজনৈতিক অনেক বন্দীকেই রাখা হয়ে থাকে।
কেউ কেউ ধারণা করেন যে এটি মানবিক ইস্যু সংশ্লিষ্ট এবং সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়ে তার সমর্থনের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। আবার অনেকে মনে করেন, প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, যাকে গৃহবন্দী করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজকুমারী বাসমার মুক্তির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি সংশ্লিষ্ট সৌদি কর্মকর্তারা।
বাসমা সাবেক সৌদি রাজার ১১৫ সন্তানদের একজন। যিনি ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সৌদি আরব শাসন করেছিলেন।
পাঁচ সন্তানের জননী বাসমা ২০০৬ সাল থেকে সৌদি গণমাধ্যমে নিয়মিত লেখালেখি করেন। কিন্ত তার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ও জনগণের হয়ে কথা বলার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি দেশটির শাসকগোষ্ঠী।
বিবাহ বিচ্ছেদের পর ২০১০-২০১১-র দিকে তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে আরব অঞ্চলের দুর্নীতি, মানবাধিকার এবং সম্পদের বৈষম্য নিয়ে কথা বলে আলোচনায় আসেন বাসমা। সৌদি আরবে ধর্মীয় পুলিশের ক্ষমতা হ্রাস, নারীদের অধিকারসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্কারের দাবিও জানান তিনি। প্রশাসনের সমালোচনা করলেও তাকে রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি।
২০১৫ সালের দিকে সৌদি আরবে ফিরে আসেন বাসমা। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিবিসি অ্যারাবিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়েমেন যুদ্ধের ইতি টানতে সৌদি আরবের প্রতি আহবান জানান তিনি। এরপর থেকে তাকে আর গণমাধ্যমে দেখা যায়নি।
সূত্র: এএফপি, বিবিসি, ডয়েচে ভেলে