হুমকিতে ভয় পাওয়ার মানুষ আমি না : ইশরাক
আমাদের অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সরকার দলীয় কাউন্সিলরদের যোগসাজশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় অসাধু সদস্যদের মাধ্যেম প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন।
আপনি নিজে এমন কোন হুমকি পাচ্ছেন কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কোন হুমকি পাইনি, তবে আমি হুমকিতে ভয় পাওয়ার মানুষ আমি না।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর গোপীবাগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানাতে এসে এসব কথা বলেন তিনি। তার লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুগ্ম সচিব ও রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, আমরা আমাদের অভিযোগ লিখিত আকারে জানিয়ে গেলাম, রিটার্নিং কর্মকর্তা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন উনি এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এর আগে মনোনয়ন যাচাই বাছাই শেষে ঠিক রিটার্নিং অফিসের সামনে থেকে আমাদের কাউন্সিলর প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। অথচ আমরা প্রার্থীরা যখন কাগজপত্র জমা দেই তখন প্রতিটি মামলার কথা উল্লেখ করি। মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করার পর ওই প্রার্থী যখন বের হন তখন তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে এর আগে আমাদের দলীয় যেসব প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তারাও বিভিন্ন সময় এমন অভিযোগ জানিয়েছেন, অভিযোগের স্তুপ জমে গেছে তবুও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এটা অতীতের ঘটনা কিন্তু এখন নির্বাচন কমিশনের সামনে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আসন্ন নির্বাচনে এ বিষয়ে তাদের সংশোধন হওয়ার।
অভিযোগ জমা দিতে এসে ইশরাক হোসেন রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেনকে বলেন, আমাদের কাউন্সিলর প্রার্থীগণ হুমকি, গ্রেফতার এবং নানা ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এজন্য আপনার কাছে আমরা লিখিত অভিযোগ জানাতে এসেছি।
উত্তরে রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন ইশতাককে বলেন, আপনাদের অভিযোগ আমরা গ্রহণ করলাম এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আসন্ন নির্বাচনে ২৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর (সকল দলের) মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। ডিএসসিসির রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দাখিলকৃত মনোনয়ন গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) গোপীবাগের ৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে যাচাই-বাছাইয়ে পর এগুলো বাতিল করা হয়। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডের ২৬ জন এবং সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে দুজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
এদিকে ডিএসসিসির মেয়র প্রার্থী হিসেবে যে সাতজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের সবার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এক হাজার ৩৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। সিটি নির্বাচনের এ তিন পদে দুই সিটিতে মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন দুই হাজার ২৬০ জন। এর মধ্যে দুই সিটিতে মেয়র প্রার্থী ছিলেন ১৪ জন।
মেয়র প্রার্থী হিসবে দক্ষিণে জমা দিয়েছিলেন যারা- দক্ষিণে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস, বিএনপির ইশরাক হোসেন, জাতীয় পার্টির হাজী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন মিলন, ইসলামী আন্দোলনের মো. আবদুর রহমান, এনপিপির বাহরানে সুলতান বাহার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আকতার উজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লা ও গণফ্রন্টের আব্দুস সামাদ সুজন।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৬০ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১০২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। সব মিলিয়ে এ সিটিতে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন ৫৬৯ জন।
এদিকে ৫ জানুয়ারির মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করা যাবে। আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে নিয়োগ করেছে নির্বাচন কমিশন।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ জানুয়ারি, প্রতীক বরাদ্দ ১০ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণ ৩০ জানুয়ারি।