‘গায়েবি গ্রেপ্তার’ আর মাঠ ছাড়ার হুমকি নিয়ে ইসিতে ইশরাক

0

দলীয় এক কাউন্সিলর পদপ্রার্থীকে গ্রেপ্তার এবং আরো একজন প্রার্থীকে মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকির অভিযোগ এনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ইশরাক হোসেন।

তবে এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বলেন, তিনি নিজে কোনো ধরনের হুমকি পাননি। ‘আর এসব হুমকিতে ভয় পাওয়ার মানুষও আমি না’, যোগ করেন বিএনপির এই ‘তরুণ তুর্কি’।  

ইসির তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটিতে ভোট হচ্ছে। পুরান ঢাকার ইশরাক হোসনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির কনিষ্ঠপুত্র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস।

সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সরাসরি দলীয় মনোনয়নের ব্যাপার থাকলেও কাউন্সিলর প্রার্থীরা শুধু দলের সমর্থন পাচ্ছেন। যাচাই-বাছাই শেষে মনোনয়ন বৈধ হওয়ার পর প্রার্থীরা এখন প্রতীকের অপেক্ষায় রয়েছেন।

এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী এবং বংশাল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. তাজ উদ্দিন আহমদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তাজের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা ও সেসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

তাজ উদ্দিন আহমদের এই গ্রেপ্তারকে ‘গায়েবি গ্রেপ্তার’ উল্লেখ করে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ইশরাক হোসেন আজ শনিবার লিখিত অভিযোগ দেন রাজধানীর গোপীবাগের ঢাকা উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেনের কাছে।

ইশরাক তাঁর অভিযোগে বলেন, ‘কাউন্সিলর পদপ্রার্থী তাজ উদ্দিন আহমদ তাজুকে বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করার পর নিজ এলাকায় যাওয়ার সময় গোপীবাগ (দেশবন্ধু হোটেলের সামনে থেকে) সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করে। খবর শুনে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ আমি থানায় গিয়ে তাঁর গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ বলে, তাঁকে আগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অথচ কিছুদিন আগে তিনি জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে এসেছেন।’

‘প্রশ্ন হলো, তাঁকে (তাজ উদ্দিন) তখন কেন গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি? এভাবে অজানা (গায়েবি) মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আমরা চিন্তিত’, যোগ করেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী।

চিঠিতে প্রকৌশলী ইশরাক আহমদ আরো এক বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থীকে মাঠ থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগও করেছেন।

‘৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সাহেদ মন্টুকে একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. নিজাম উদ্দিনের ছেলে ইমন ও তাঁর ভাই কাইয়ূমের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন লোক কাউন্সিলর অফিসে গিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোসহ নানারকম হুমকি- ধমকি ও ভয়-ভীতি প্রদান করে’, বলা হয় ইশরাকের চিঠিতে।

বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী মনে করেন, ‘প্রার্থীদের হুমকি প্রদান ও গ্রেপ্তার করে জনমনে ভীতি সৃষ্টি ও দলীয় কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যহত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।’

রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে এসে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন।

‘রিটার্নিং কর্মকর্তা আশ্বস্ত করেছেন’
ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিযোগ লিখিত আকারে জানিয়ে গেলাম, রিটার্নিং কর্মকর্তা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন- উনি এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এর আগে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষে ঠিক রিটার্নিং অফিসের সামনে থেকে আমাদের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। অথচ আমরা প্রার্থীরা যখন কাগজপত্র জমা দেই তখন প্রতিটি মামলার কথা উল্লেখ করি। অথচ মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করার পর ওই প্রার্থী যখন বের হন তখন তাঁকে অনুসরণ করে গ্রেপ্তার করা হয়।’

‘এই কমিশনের অধীনে এর আগে আমাদের দলীয় যেসব প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তাঁরাও বিভিন্ন সময় এমন অভিযোগ জানিয়েছেন, অভিযোগের স্তুপ জমে গেছে তবুও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এটা অতীতের ঘটনা; কিন্তু এখন নির্বাচন কমিশনের সামনে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আসন্ন নির্বাচনে এ বিষয়ে তাদের সংশোধন হওয়ার’, ইসিকে ইঙ্গিত করে বলেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com