জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না: মেজর হাফিজ
সিলেট মুক্ত দিবসের অন্যতম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা (অব.) মেজর হাফিজ উদ্দিন (বীরবিক্রম) বলেন- জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না। এখন ইতিহাসকে বিকৃতি করা হচ্ছে। মাত্র ১৫ দিনের যুদ্ধের পর ভারতীয়দের হাতে পাক বাহিনী সারেন্ডার করেছে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হলো না কেন? এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখের স্মৃতি।
গতকাল বিকালে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে ‘সিলেট মুক্ত দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
১৭ই ডিসেম্বর সিলেট মুক্ত হয় জানিয়ে মেজর হাফিজ বলেন- তৎকালীন সময়ে জেডফোর্সের প্রধান মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সিলেট মুক্ত হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ভারতীয় সহ মুক্তিবাহিনীর কাছে সিলেটে পাক আমির ব্রিগেডিয়ার ইফতেখার রানা সারেন্ডার করেছিল।
বক্তৃতায় মেজর হাফিজ সিলেটে তার যুদ্ধের নানা স্মৃতি তুলে ধরেন। যুদ্ধের বর্ণনা দিয়ে জানান- ১৯৭১ সালে ১০ই ডিসেম্বর কানাইঘাট থেকে সিলেটে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ‘লংমার্চ’ হয়েছিল। তার আগে কানাইঘাটের ওদিকে একটি যুদ্ধ হয়েছিল। মেজর জিয়ার নেতৃত্বে ওই যুদ্ধে পাক বাহিনী পরাজয় হওয়ার পর আমরা সিলেট মুক্ত করার অনুপ্রেরণা পাই। এরপর ১১০০ সৈনিক সহ আমরা একসঙ্গে চারখাই হয়ে সিলেটে আসি। তৎকালীন মেজর ও পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, কর্নেল অলি ও আমরা সিলেটে আসি। আসার সময় আমরা একসঙ্গে ঘুমিয়েছি, সময় কাটিয়েছি। চারদিন পর দেখলাম একটি সাদা বিল্ডিং। ১৪ই ডিসেম্বর সকাল বেলা আমরা টিলার উপর গেলাম। তখন যুদ্ধ চলছে খাদিমনগর এলাকায়। টিলার উপর থেকে দেখলাম এমসি কলেজে পাক বাহিনী রোদ পোহাচ্ছিল। আমাদের দেখে বলে তোমরা কারা? এরপর তারা গুলি ছোড়া শুরু করে। সারা দিনে এমসি কলেজ এলাকায় ৪-৫টা আক্রমণ ও যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে আমার ১৪ জন সহকর্মী শহীদ হন। পাকিস্তানিদের ৪১ জন নিহত। বিকালে বিমান আক্রমনের পর পাকিস্থানীরা পিছু হটে। ১৫ তারিখ সকালে পাকিস্তানিরা জানায়- তারা সারেন্ডার করবে। সিলেটে সারেন্ডার হয় ১৭ তারিখে। ব্রিগেডিয়ার ইফতেখার রানা আমাদের কমান্ডার জিয়াউর রহমানের কাছে সারেন্ডার করে বলে জানান মেজর হাফিজ।