কলকাতা সিটি নির্বাচন, কী হতে পারে বিজেপির?
চলতি বছর পর পর তিনটি ভোট দেখছে কলকাতা শহর। একুশের বিধানসভা নির্বাচন, মমতার জন্য ভবানীপুর উপ-নির্বাচন এবং রোববার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া (১৯ ডিসেম্বর) কলকাতার সিটি নির্বাচন।
প্রথম দুটি নির্বাচনে দাপটের সঙ্গে জয় পেয়েছে মমতার দল। বাকিটা জানা যাবে ২১ ডিসেম্বর, ফল ঘোষণার দিন।
একুশের বিধানসভা ভোটে জিতে তৃতীয়বার রাজ্যে সরকার গঠন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তখন এক গ্লাস দুধে এক ফোঁটা লেবুর মতো কাজ করেছে মমতার নন্দীগ্রামে পরাজয়। যদিও ভবানীপুরে উপ-নির্বাচনে সেই লেবু সরিয়েছেন তৃণমূলের এই প্রার্থী। নিজের এলাকায় ব্যাপক ব্যবধানে জয় পান তিনি।
তবে এসব ভোটের রেশ কাটার আগেই শহরে আবারও একটা ভোট। কলকাতা করপোরেশন দখলের নির্বাচন। শেষবার সিটি ভোট হয়েছিল ২০১৫ সালে। হিসাব অনুযায়ী ২০২০ সালে নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে প্রায় এক বছর ধরে ঝুলে থাকার পর কলকাতা করপোরেশনের নির্বাচন হতে চলেছে রোববার।
এই নির্বাচনে ৯৫০ জন প্রার্থী দলীয় প্রতীকে লড়ছেন। এরমধ্যে ৩৭৮ জন নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে মূল লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপির। বাকি রইল বাম এবং কংগ্রেস। অর্থাৎ একুশের বিধানসভা ভোটে যে লড়াই ত্রিমুখী ছিল, কয়েক মাসের ব্যবধানে তা চতুর্মুখী হয়ে গেছে। প্রসঙ্গত, বিধানসভায় বাম এবং কংগ্রেস জোট বেধেছিল।
তবে এই চতুর্মুখী লড়াইয়ে সুবিধা মমতার দলের। কারণ একুশের বিধানসভা ভোট এবং পরবর্তী উপ-নির্বাচনে পরাজয়ের জ্বালার ক্ষত এখনও রাজ্য বিজেপি সারিয়ে উঠতে পারেনি। পাশাপাশি প্রথম থেকেই তাদের কলকাতায় সাংগঠনিক দুর্বলতা আছে। ফলে সিটি ভোটের দৌড়ে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে দলটি।
একই অবস্থা বাম-কংগ্রেসের, বিধানসভা ভোটে জোটের জটে জড়িয়ে গেছে তারা। তবে এবার সিটি ভোটে সম্ভাবনা রয়েছে বাম এবং কংগ্রেসের। কারণ দুইপক্ষ একা লড়ার কারণে তৃণমূলের ভোটব্যাংক ভাঙতে পারে। কারণ বিধানসভা ভোটে এদের জোট কোনো পক্ষের সমর্থকই ভালোভাবে নেননি। ফলে সেসব ভোট ওই সময় তৃণমূলে পড়েছিল। ফলে এবার বড় সম্ভাবনা থাকছে দুই দলের কাছে। এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল।
সেক্ষেত্রে প্রধান বিরোধী দল হতে পারে বাম কিংবা কংগ্রেস। তবে শাসক দলের হাতেই থাকবে কলকাতা করপোরেশনের চাবিকাঠি। এর আগে ২০১০ এবং ২০১৫- দুটি সিটি ভোটেই জয় পেয়েছে মমতার দল। একুশের সিটি ভোটে হ্যাট্রিক হওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। তা শহরবাসী সবাই জানেন। তাই বিজেপির পরিণতি কী হবে তাই এখন দেখার বিষয়।