ছাত্রলীগের হাত থেকে বাঁচতে জীবনের নিরাপত্তা চাইলেন পদত্যাগ করা হল প্রভোস্ট সিরাজাম মনিরা
সদ্য পদত্যাগ করা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) দোলনচাঁপা হলের প্রভোস্ট সিরাজাম মনিরা নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন।
গতকাল শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন জমা দেন তিনি। রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আবেদনপত্রে সিরাজাম মনিরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিবের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়ে ও তার দেওয়া জীবননাশের প্রকাশ্য হুমকির মুখে গত ১৫ ডিসেম্বর তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা হল দোলনচাঁপার প্রভোস্ট পদ থেকে আমি ও চারজন হাউস টিউটর একসঙ্গে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি। এরপর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীতে জাককানইবি পরিবার থেকে আমার সহকর্মীদের প্রোটেকশনে আমি যখন পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যাই তখন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার দুজন সঙ্গী অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে আমার দিকে তাকিয়ে অট্টহাসি হাসে। আমার পক্ষে এই নোংরা ইঙ্গিতপূর্ণ অপমান সহ্য করা সম্ভব হচ্ছিল না। আমার সহকর্মীরা এই জিঘাংসা দেখে আমাকে তাড়াতাড়ি বাসায় রেখে যান।’
তিনি আরও লিখেন, ‘এরপর থেকে আমি লক্ষ্য করেছি যে কতিপয় শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে আমার বাসার দিকে তীব্র নজর রাখছে। রাকিব ও তার সঙ্গী-সাথীদের প্রকাশ্য হুমকির মুখে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এখন আমি কার্যত বাসবন্দি। এমতাবস্থায়, উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা করে আমার নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।’
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিরাজাম মনিরা অসুস্থতা ও পারিপার্শ্বিক চাপে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন বলে কথা বলতে রাজি হননি।
অন্যদিকে ছাত্রলীগ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বানোয়াট। এসবের সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই।’
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা ও দোলনচাঁপা হলে উন্নত মানের খাবার পরিবেশনের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দোলনচাঁপা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজনের সব টাকা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের হাতে তুলে না দেওয়ায় ওই হল প্রভোস্টকে চরম অপমানিত হতে হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দোলনচাঁপা হলের প্রাধ্যক্ষ (প্রভোস্ট) ও চার আবাসিক শিক্ষক (হাউজ টিউটর) পদত্যাগ করেন।