মৃত ব্যক্তিরা ভোট দিলেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে!
পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ভেলোয়ার পাড়ার কামাল হোসেনের মৃত স্ত্রী কহিনুর আক্তার ২০২১ সালের ২৮শে নভেম্বর ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে যান তিনি। শুধু তিনি নন একই ওয়ার্ডের ফকির পাড়ার ইদ্রিছ মিয়ার স্ত্রী মৃত রেহেনা বেগমও খোদ ভোট দিয়েছেন। তাছাড়া বিদেশে বসেও ভোট দিয়েছেন অনেকেই। ঘটনাগুলো ঘটেছে পেকুয়া উপজেলায় গত ২৮শে নভেম্বর অনুষ্ঠিত উজানটিয়া ইউপি নির্বাচনে। ৪নং ওয়ার্ডের ঘোষিত ফলাফল মেনে নিতে না পেরে এসব অভিযোগ নিয়ে উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেন এক প্রার্থী। আর তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই ওয়ার্ডের ফলাফল ও নির্বাচনী পরবর্তী সব পদক্ষেপ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। জানা যায়, উজানটিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ঘোষিত ফলাফল স্থগিত ও ভোট পুনঃগণনার আবেদন করে গত ২রা ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে রিট করেন ওই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী জিয়াউল হক সিকদার। তিনি তালা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।
তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ই ডিসেম্বর বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ উজানটিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ফলাফলসহ পরবর্তী সব নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করেন এবং কেন ভোট পুনঃগণনা করা হবে না সে বিষয়ে রুলনিশি জারি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটকারী সদস্য প্রার্থী জিয়াউল হক সিকদার জানান, ‘ওয়ার্ডে আমরা ৩ জন প্রার্থী থাকলেও ভোটে নানা অনিয়মের মাধ্যমে কৌশলে আমাকে হারিয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নামের পাশে মার্কা উল্লেখ থাকলেও আমার নামের পাশে মার্কা পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়নি। কলমের খোঁচায় ২০ ভোটের ব্যবধানে আমাকে হারিয়ে দেয়া হলেও নির্বাচনের পরদিন ওই কেন্দ্রে ২০টির অধিক ব্যালট পাওয়া যায়। এ ছাড়া মৃত ব্যক্তি, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিও ভোট দেয়ার প্রমাণ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রথমে রিটার্নিং অফিসার বরাবরে আবেদন করি কিন্তু উনি কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আমি উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেই। মাননীয় আদালত ৪নং ওয়ার্ডের নির্বাচনের পরবর্তী সব পদক্ষেপ স্থগিত ঘোষণা করেন।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার রেজাউল করিম জানান, ‘উচ্চ আদালতের আদেশ আমাদের হাতে এসেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে আমাদের আইন শাখার পরামর্শ অনুযায়ী ওই ওয়ার্ডের বিষয়ে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’