ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকিতে’ পদত্যাগ করলেন হল প্রভোস্ট

0

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিবের ‘হুমকিতে’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দোলনচাঁপা হলের প্রভোস্টসহ পাঁচজন পদত্যাগ করেছেন।

বুধবার বিকেলে এমনটাই অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হুমায়ুন কবীর পদত্যাগপত্র জমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা ও দোলনচাঁপা হলে উন্নত মানের খাবার পরিবেশনের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দোলনচাঁপা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজনের সব টাকা ছাত্রলীগ সম্পাদকের হাতে তুলে না দেওয়ায় দোলনচাঁপা হল প্রভোস্টকে চরম অপমানিত হতে হয়েছে।

উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের জন্য পোলাও চাল ও খাসি কেনা হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুল হাসান রাকিব উত্তেজিত হয়ে সব টাকা তার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নানা হুমকি ধামকি দেন বলে জানান দোলনচাঁপা হল প্রভোস্ট সিরাজুম মুনিরা।

প্রভোস্ট সিরাজুম মুনিরা ছাড়াও পদত্যাগ করেন হাউস টিউটর আরিফ আহমেদ, আফরুজা ইসলাম লিপি, রাশেদুর রহমান ও ফারজানা খানম।

সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট সিরাজুম মুনিরা জানান, একজন শিক্ষক ও প্রভোস্টের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়, সেটা ভুলে গিয়ে হুমকি দিয়ে আমাকে ছাত্রদের হলে যেতে বললে আমি সেখানে যাইনি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুল হাসান রাকিব জানান, টাকা চাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। শিক্ষার্থীদের অনুরোধে আমরা দুটি হলের খাবারের আয়োজন একসঙ্গে করতে চেয়েছিলাম। আর এই আলাপটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রক্টর স্যারের সামনেই হয়েছে। বরং দোলনচাঁপা ছাত্রী হলের প্রভোস্ট ছাত্রী প্রতিনিধিদের না জানিয়ে একতরফাভাবে খাবারের আয়োজন করেছেন। এতে হলের ছাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়েছে।

সিরাজাম মুনিরা বলেন, এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে হল কর্তৃপক্ষের কথা হয়। এ সময় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রাকিব দোলনচাঁপা হলের খাবারের জন্য পুরো টাকা তার হাতে তুলে দিতে বলে। এর আগেই আমরা খাবারের জন্য ৬১ হাজার টাকা ও অন্যান্য উপহারসামগ্রী যোগাড় করি। আমরা খাসি ও পোলাও চালসহ সবকিছু কিনে ফেলেছি। এতে ছাত্রলীগ নেতারা আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে খাসি ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করে তাদের হাতে পুরো টাকা তুলে দিতে হবে বলে জানায়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার সময় ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর স্যার ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রইলেন। তারা ছাত্রলীগ নেতাদের সামনে কিছুই বললেন না। নিরুপায় হয়ে আমরাও তাদের হুমকি-ধামকি খেয়ে চলে গেলাম। এ ঘটনাটি ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে ক্যাম্পাসে ঘটেছে। এ নিয়ে ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে দফায় দফায় মিটিং হয়েছে। আমিসহ চারজন হাউস টিউটর একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা এই অরাজক পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করতে পারব না। তাই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১৫ ডিসেম্বর বিকেল পৌনে ৫টায় হল প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, প্রভোস্টসহ বাকিরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। প্রশাসন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে। আর সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত। আমি প্রক্টর হিসেবে আমার দায়িত্ব পালন করছি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com