ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আনুষ্ঠানিক মুদ্রার স্বীকৃতি দিলো মিয়ানমারের ছায়া সরকার
মিয়ানমারের সামরিক জান্তাবিরোধী ছায়া সরকার জানিয়েছে, তারা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি টেদারকে নিজেদের আনুষ্ঠানিক মুদ্রা হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।
ভার্চুয়াল এই মুদ্রাকে আনুষ্ঠানিক মুদ্রা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে জান্তাবিরোধী মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) পক্ষে তহবিল সংগ্রহ করা ও মূল্য পরিশোধ করা সহজ হবে বলে জানানো হয়।
মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার ইতোমধ্যেই এনইউজিকে ‘সন্ত্রাসের’ দায়ে বেআইনি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এনইউজির পরিকল্পনা, অর্থ ও বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী তিন তুন নাইঙ ১১ ডিসেম্বর এক ফেসবুক বার্তায় টেদারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা করেন।
ফেসবুক বার্তায় তিনি বলেন, এর ফলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে দ্রুত অর্থ সরবরাহ সম্ভব হবে।
বিটকয়েনসহ অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মতোই টেদারে অর্থ বিনিময় করা হয়। তবে মার্কিন ডলারের সাথে এর মূল্য সামঞ্জস্যপূর্ণ করে রাখায় অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো টেদারের মূল্যে ওঠা-নামা হয় না।
গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটিতে অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অপরদিকে সামরিক জান্তার অবাধ্যতার অংশ হিসেবে বিরোধীরা জনসাধারণকে সরকারি কর দেয়া বন্ধ করায় উৎসাহিত করছে।
এদিকে সরকারি তহবিলে কোনো প্রকার প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে এনইউজি।
১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। পরে ১ আগস্ট জরুরি অবস্থার মেয়াদ ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং লাইং।
গত বছরের নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়।
গত ৭ সেপ্টেম্বর এনইউজি দেশের সাধারণ মানুষকে সামরিক জান্তার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দেয়।
সূত্র : আলজাজিরা