বিজয়ের ৫০ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র জনগণ এখনো পায়নি: বিএনপি
বিজয়ের ৫০ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত পাইনি উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা আশা করছি জনগণ আবারও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জেগে উঠবেন। এই দানবীয় স্বৈরাচারী কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবেন।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই দিন আমাদের জাতির মেধাবী বুদ্ধিজীবী, চিকিৎসক, শিক্ষক, সাংবাদিক ও প্রকৌশলীসহ অসংখ্য বুদ্ধিজীবীদের পাক হানাদার বাহিনী নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধকালীন সময়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা ৫০ বছর পূরণ করতে চলেছি এই বছরে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু করেছিলাম এবং আমাদের অগণিত শহীদ প্রাণ দিয়েছে আমাদের বুদ্ধিজীবী মহল প্রাণ দিয়েছেন। দুভাগ্যক্রমে সেই মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক একটা রাষ্ট্র এখন পর্যন্ত পাইনি। শুধু তাই নয়; আমাদের জনগণের যে আশা-আকাঙ্খার ছিল মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা ছিল, সবকিছুকে ভূলুণ্ঠিত করে দিয়েছে। এখন এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে এদেশের মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা অসংখ্য মানুষকে খুন ও গুম করেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, তারা আজকে এদেশের স্বাধীনতার সময় যিনি বন্দী ছিলেন প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এবং সেই সময় তারেক রহমান এবং আরাফাত রহমান কোকো বন্দি ছিলেন ১৯৭১ সালে।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কয়েক বছর ধরে মিথ্যা সাজানো মামলায় তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। এখন এই মুহূর্তে তিনি অসুস্থ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছেন। আমরা বারবার বলেছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য। কিন্তু এই গণবিরোধী সরকার স্বাধীনতাবিরোধী সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু নয় কাউকেই তারা এখানে রাজনীতি করতে দিতে চান না। এদেশে তারা বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন ,দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একদিকে যেমন তারা বন্দি করে রেখেছেন চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছেন না। অন্যদিকে সমস্ত দেশপ্রেমিক মানুষের উপর তারা অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই দিনে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। এবং আমরা আশা করছি জনগণ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জেগে উঠবেন এবং দানবীয় স্বৈরাচারী কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার জনগণের পার্লামেন্ট এবং একটা মুক্ত রাষ্ট্র সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবেন।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।