খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবি ঢাবি সাদা দলের
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন করেন তারা। একই সঙ্গে ‘কিসের ভয়ে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হচ্ছে না’ সে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক নেতারা।
ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, সাদা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিষ দিয়ে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। এজন্য সরকার ভয় পাচ্ছে বিদেশে চিকিৎসার জন্য গেলে সেখানে যদি এটি উদ্ঘাটিত হয়। এই সরকার খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে অন্যদিকে ধাবিত করার জন্য মুরাদ হাসানের ঘটনা সামনে নিয়ে এসেছে। মানুষ এত বোকা নয়। ইতোমধ্যে পতনের লক্ষণ শুরু হয়েছে। সামরিক বাহিনীর সাতজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সাবেক সেনাপ্রধানের ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। জুলুম করে রেহাই পাওয়া যাবে না। সেই জুলুম আবার নিজের ওপর এসে পড়বে।’
সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘বেগম জিয়া কেবল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী নন, তিনি রাজপথের এক লড়াকু সৈনিক। বাংলাদেশে গণতন্ত্র উদ্ধারে এক মহীয়সী নারী বেগম খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের আজকের এই উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফসল। বেগম জিয়া কেবল গণতন্ত্র উদ্ধারে লড়াই করেননি একই সঙ্গে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন। আজ সেই বেগম জিয়া অসুস্থ অবস্থায় জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে অথচ তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত সম্পূর্ণ সাজানো ও মিথ্যা মামলায় আসামি করে আইনের দোহাই দিয়ে আজ তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
সরকারের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান বলেন, ‘তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সারা পৃথিবী থেকে তার সুচিকিৎসার দাবি উঠেছে। কিন্তু এই সরকার তাকে সেটা থেকে বঞ্চিত রাখছে। এত ভয় পাচ্ছেন কেন, কী এমন লুকায়িত রয়েছে যে তিনি বিদেশে গেলে সেগুলো ফাঁস হয়ে যাবে। যদি ভয় না থাকে অবিলম্বে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় আছে, তারা বিভিন্ন সময় সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন এবং সুস্থ হয়েও ফিরছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বারবার বলার পরও বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। ইতিহাস বলে, প্রতিহিংসা কখনো সমাধান নয়, প্রতিহিংসা আবারও প্রতিহিংসা ডেকে আনে। এই শুভবুদ্ধি আপনাদের উদয় হোক এ কামনা করছি।’
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এদেশের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেক্টর কমান্ডার ও বীর প্রতীক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী, এদেশের একটা বৃহৎ রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। সরকারের সঙ্গে জড়িত সামান্য ব্যক্তিকেও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয় অথচ খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে নানা অজুহাত দেখানো হচ্ছে। সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে কটূক্তিমূলক কথা হচ্ছে, এসব কাম্য নয়। আমরা দ্রুত বেগম জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতির দাবি জানাচ্ছি।’