রাজশাহীতে মুরাদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ
প্রতিমন্ত্রী আর দলীয় পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানের নামে তথ্য প্রযুক্তি আইনে করা মামলার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। মামলায় ইউটিবার মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদ ওরফে নাহিদ হেলালকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছিল।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত এ মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
এর আগে, রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. জিয়াউর রহমান এ মামলার আবেদনটি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করে পরে আদেশের জন্য রাখেন।
আবেদনটি খারিজের পর রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে থাকা রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলি অ্যাডভোকেট ইসমত আরা সাংবাদিকদের বলেন- তিনটি পর্যবেক্ষণে আদালতের বিচারক ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন।
এর মধ্যে প্রথম পর্যবেক্ষণ রয়েছে- যাকে কেন্দ্র করে এ মামলার আবেদন জানানো হয়েছিল (জাইমা রহমান) তিনি নিজে আদালতে এসে এই মামলাটির আবেদন করেননি। মামলার বাদী একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি।
দ্বিতীয় পর্যবেক্ষণ হচ্ছে- মামলার আবেদনে ঘটনার দিন ১ ডিসেম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। আর মামলার আবেদন করা হয়েছে ১২ ডিসেম্বর। এ সময়ের মধ্যে জাইমা রহমান প্রাথমিকভাবে থানায় কোনো জিডি বা অভিযোগ দায়ের করেননি। যদি তিনি করতেন আর থানা সেই জিডি বা অভিযোগ না গ্রহণ করতো তাহলে ভুক্তভোগী আদালতের আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি থানায় না গিয়ে বিলম্বিত সময়ে সরাসরি আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার জন্য আবদেন করেছেন।
তৃতীয় পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে- ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে একই আবেদন দেশের বিভিন্ন জেলায় করা হচ্ছে। আদালত মনে করে- একই অভিযোগে একাধিক আদালতে মামলা হাওয়াটা বাঞ্ছনীয় নয়। এ ঘটনায় দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিরও কোনো আশঙ্কা নেই। এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে এ মামলার আবেদনটি করত।
এছাড়া মামলায় ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো উল্লেখ করে এই মামলার আবেদন করা হয়েছিল তার কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি বলে মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, রোববার (১২ ডিসেম্বর) ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সর্ম্পকে কুরুচিপূর্ণ, নারী বিদ্বেষী, কুৎসিত ও মর্যাদাহানীকর মন্তব্য করায় সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ও মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। দুপুরে বগুড়া জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক জিয়াউর রহমান মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে সামজিক ও ব্যক্তিগতভাবে অপমান, অপদস্থ ও হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। আসামিরা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানসহ নারী সমাজের প্রতি অবমাননাকর, অপমানজনক এবং আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এর ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।