১৩ বছর স্বৈরশাসন চালাবার পরে এই সরকার আস্তে আস্তে ধরা খেতে শুরু করেছে: মান্না
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সরকার আস্তে আস্তে ধরা খেতে শুরু করেছে। সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশের সুচিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ১৩ বছর ধরে একটা স্বৈরশাসন চালাবার পরে এই সরকার আস্তে আস্তে ধরা খেতে শুরু করেছে। তাদের মন্ত্রী নিজের জানের ভয়ে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে ব্যস্ত হয়েছেন। বিদেশের কোন রাষ্ট্র তাকে জায়গা দিচ্ছে না। এরকম একটা সরকার আর তার এরকম একটা মন্ত্রী। বাংলাদেশকে নিয়ে আজ বিশ্বের ১১০টি দেশ চিন্তিত। বাংলাদেশকে নিয়ে পৃথিবীর গণতন্ত্রকামী দেশ এবং মানুষ মনে করে, একটা মুক্তিযুদ্ধের পরে যা হওয়ার কথা ছিল এই দেশে তার সম্পূর্ণ বিপরীত কা- ঘটছে।
আমাদের পুলিশ বাহিনী, আমাদের র্যাব, যারা সম্মানের সাথে এ দেশে অতীতে কাজ করছে আজ তারা বিশ্বের দরবারে কলঙ্কিত, সন্ত্রাসী, মানবতাবিরোধী বলে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে।
সরকারের সমালোচনা করে মান্না বলেন, এতোদিন ধরে তারা আমাদের কাছে বলার চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে আমরা একটা সম্মানের জায়গায় নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আর আমরা দেখছি ওরা (বিদেশী রাষ্ট্র) বাংলাদেশকে বারবার সতর্ক করছে। বারবার বলছে ঠিক পথে চলছো না। তারপরও যখন কথা শুনছে না তখন ওই দেশেই ঢোকাই নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতো বড় লজ্জার পরে ওদের (সরকার) কোন লজ্জা নাই। তারপরও তারা বলছে, আমরাতো কোন মানবতা লঙ্ঘন করি না। আমরাতো দেশে সম্মানের সাথে কাজ করছি।
খালেদা অত্যন্ত অসুস্থ উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষের মনের মধ্যে যিনি রয়েছেন সেই বেগম খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছেন। কত বড় অমানুষ পাষণ্ড হলে তার চিকিৎসা বন্ধ রেখে ওরা (সরকার) উল্লাস করবার জন্য ব্যস্ত আছে কবে তিনি মারা যাবেন। আমি মনে করি, উপরে আল্লাহ আছেন। আর নিচে ১৮ কোটি মানুষ। এদেশের মানুষের দোয়ায় বেগম জিয়া সুস্থ হবেন এবং মানুষের মাঝে ফিরে আসবেন। তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আপনারা যে লড়াই শুরু করেছেন সেই লড়াই অব্যাহত রাখুন। ওরা তো ধরা খেতে শুরু করেছে। এরপরে এমন ভাবে ধরা খাবে, যেমন জলের মধ্যে মানুষ ধরা খেলে আটকে যায়, আমাদের সরকার ঠিক সেভাবে আটকে যাবে।
চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মান্না বলেন, আমি দুঃখের সঙ্গে একটা কথা বলতে চাই, আমাদের প্রতিবেশী দেশ চীন সব সময় একটা কথা বলতো, বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের জন্য তারা লড়াই করে। তাদের রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি আমাদের, সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ভিডিও মেসেজ দিয়েছেন একটা বিবৃতি লিখে পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, এই নেত্রী যিনি এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তিনি নাকি দেশে গণতন্ত্র দিয়েছেন। তিনি নাকি দেশের উন্নয়ন করেছেন। আর তাকে নাকি মানুষ সমর্থন করে।
আমার অবাক লাগে, আমি জানি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা (চীন) আমাদের সমর্থন করেনি, এমনকি পাকিস্তানও যখন স্বীকৃতি দিয়েছিল তখনো তারা আমাদেরকে স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু এখন আমি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়ার আশা করি। আমি জানি না যিনি এখানে রাষ্ট্রদূত আছেন তিনি তার সরকারের কথা পুরোপুরি বলতে পেরেছেন কিনা। কিন্তু এই যদি অবস্থা হয় তাহলে বাংলার মানুষ ওই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে।