রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জাতির জন্য লজ্জার: নুর
রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপকে জাতির জন্য ‘চরম লজ্জা, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার’ বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নুরুল হক নুর বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি ও ১০ প্রতিষ্ঠানের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ, র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছয় বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা এবং প্রতিষ্ঠান হিসেবে র্যাবের নাম রয়েছে।
তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক, ভোটবিহীন কর্তৃত্ববাদী সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, অসাংবিধানিক ও বেআইনিভাবে ভিন্নমত এবং বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়নের মতো অমানবিক কর্মকাণ্ডের ফলে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের জন্য চরম লজ্জা, উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগের।
ডাকসুর সাবেক এ ভিপি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়াও চরম অসম্মান ও উৎকণ্ঠার, যা বাংলাদেশের বর্তমান কর্তৃত্ববাদী অগণতান্ত্রিক সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বহির্প্রকাশ। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি বিরাট প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশ আগামীতে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনসহ বিভিন্ন সেক্টরে সংকটের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে নুর বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে একটি ‘স্বাধীন তদন্ত কমিশন’ গঠন করে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সরকারের প্রতি গণঅধিকার পরিষদ আহ্বান জানায়। এ অবস্থা মোকাবিলায় জাতীয় স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীকে দেশের সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে জরুরি সর্বদলীয় সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানাই।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে এ গণঅধিকার পরিষদ নেতা বলেন, আপনাদের দায়িত্ব সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা থেকে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের জনগণের সেবা ও কল্যাণের জন্য কাজ করা। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার শপথ নিয়ে আপনারা কোনো দল বা অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী সরকারের পক্ষে কাজ করে জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারেন না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারি কর্মচারীদের জনগণের পাশে থাকা এবং দল নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে দেশ-জাতির কল্যাণে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, বিল্পব পোদ্দার, আবু হানিফ, মাহফুজুর রহমান, সোহরাব হাসান ও সাদ্দাম হোসেন।