দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে: তারেক রহমান
দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ শুক্রবার (১০ডিসেম্বর) জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেয়া বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাণীতে তারেক রহমান বলেন, সকল দেশে মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ‘মানবাধিকার দিবস’ জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত হয় ১৯৫০ সালে ১০ ডিসেম্বর। তখন থেকে প্রতি বছর ‘মানবাধিকার দিবস’ পালিত হয়ে আসছে ১০ ডিসেম্বর। এইদিনে আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মৌলিক মানবিক অধিকারহারা নির্যাতিত মানুষের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, যারা বাক, ব্যাক্তি, চিন্তা, প্রার্থনা, মূদ্রণসহ নাগরিক স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার হতে গিয়ে ক্ষমতাসীন ও কর্তৃত্ববাদী গোষ্ঠির নৃশংস নিপীড়নে জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সহমর্মিতা।
তারেক রহমান অভিযোগ করে বলেন, আজও বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে মানুষ একদলীয় স্বেচ্ছাচারী শাসন, গোষ্ঠী, বর্ণ ও জাতিগত সংঘাতে নির্মমভাবে খুন ও গুপ্ত হত্যার শিকার হচ্ছে এবং গুম তথা নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে নানা বয়সী অগণিত প্রাণ। জাতিসংঘের সার্বজনিন ঘোষনায় বলা হয়েছে-বিশ্বের সব জাতির সকল মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। কিন্তু দেশে দেশে নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শাসকেরা জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকারের সার্বজনিন ঘোষনার নির্দেশনাগুলোকে তাচ্ছিল্য করে নিজ দেশের জনগণের উপর চালিয়ে যাচ্ছে নির্দয় দমন-পীড়ণ। শুধুমাত্র ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখার জন্য ন্যায়-নীতি, ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা অগ্রাহ্য করতে হয়, আর সেজন্য এই সকল গণবিরোধী শাসক গোষ্ঠী জনগণের মানবাধিকারের তোয়াক্কা করেনা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দুঃশাসনের অচলায়তন তৈরী করতে গিয়ে তারা প্রতিবাদী জনগণের উপর চালায় পাশবিক উৎপীড়ণ। যারা সত্য উচ্চারণ করতে চায় তারা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজিবিসহ নাগরিক সমাজের যেই হোকনা কেন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয় এবং কারাবাস, শারিরিকভাবে নির্যাতনসহ জখম, হত্যা ও গুমেরও শিকার হতে হয়।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘মানবাধিকার দিবস’ এর এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে “সমতা-বৈষম্য হ্রাস করে, মানবাধিকারের অগ্রগতি” অর্থাৎ সমাজে বৈষম্য দুর করে সমতার পরিসর বিস্তৃত হলেই মানবাধিকারের অগ্রগতি হবে। তাই তাদের সংঘবদ্ধ হয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তারেক রহমান অভিযোগ করে আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে জনগণের না আছে নাগরিক স্বাধীনতা, না আছে মৌলিক মানবিক অধিকার।
তিনি বলেন, দেশের বিপুল জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সকল ধরণের মানবাধিকার কেড়ে নিয়ে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাঁকে অন্যায়ভাবে বন্দী করা হয়েছে। তিনি এখন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিনা দোষে তাঁকে সাজা দেয়া হয়েছে। তিনি স্বৈরশাসকের প্রতিহিংসার শিকার। বেগম খালেদা জিয়ার মৌলিক মানবাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে সুচিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। সুতরাং এই নৈরাজ্যকর দুঃশাসনের ছোবল থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের এই মূহুর্তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। আর সেজন্য গণতন্ত্র পূণ:রুদ্ধারের অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন তরান্বিত করতে হবে। দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জনগণের মিলিত কন্ঠের আওয়াজ তুলে বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গিকার।