বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের ‘মানবাধিকার’ শূণ্যের নিচে অবস্থান করছে: মির্জা ফখরুল
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের ‘মানবাধিকার’ শূণ্যের নিচে অবস্থান করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেয়া বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মৌলিক মানবিক অধিকারহারা নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা। বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ দুঃসময় বয়ে চলছে। ক্ষমতাসীনরা বাংলাদেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকার সীমাহীন রক্তপাত ও বেপরোয়া নিপীড়ন নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সকল গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে নিয়েছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার মানবাধিকারের পরিপূরক। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার শূণ্যের নিচে অবস্থান করছে। এদেশে শুধু মাত্র বিরোধীদলের নেতাকর্মিরাই শুধু নয়, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, নারী, শিশুসহ কারোই কোন নিরাপত্তা নাই। এরাও গুম, গুপ্ত হত্যা এবং বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও দল নিরেপক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষক, টকশো আলোচকদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে এবং কাউকে কাউকে কারান্তরীণও করে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে চলছে অমানবিক স্বৈরশাসন। শাসকগোষ্ঠী পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চরম কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে। গণতন্ত্রের জন্য যিনি বারবার আপোষহীন লড়াই চালিয়ে গেছেন সেই আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সকল মানবাধিকার কেড়ে নিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তাঁর উন্নত চিকিৎসা নেয়ার অধিকারও সরকার হরণ করেছে। এসময় তিনি বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি মনুষ্যত্বহীন নির্দয় আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, আমি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘মানবাধিকার দিবস’ এর এ বছরের মূল থীম হচ্ছে “সমতা-বৈষম্য হ্রাস করে, মানবাধিকারের অগ্রগতি” অর্থাৎ মৌলিক মানবাধিকারে অগ্রগতি নিশ্চিত হবে সমাজে বৈষম্য হ্রাসের মধ্য দিয়ে। এই বাক্যটির মূল ভাব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সমাজে বৈষম্য হ্রাসের মাধ্যমে সামাজিক সাম্যের ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়, পাশাপাশি মানবাধিকারও চূড়ান্ত বিকাশ লাভ করে। আজও মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই মানবাধিকারের পক্ষে ধর্ম-বর্ণ-জাতি-লিঙ্গের বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে আসতে হবে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে মানুষের ন্যুনতম বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা নেই। নিয়ন্ত্রিত রাজনীতির সীমিত সুযোগও কেড়ে নেয়া হচ্ছে। সভা-সমাবেশ তথা প্রতিবাদ করার ন্যুনতম সুযোগ অবশিষ্ট নেই। নাগরিক অধিকার পূণ:রুদ্ধারের জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে এই হোক আমাদের দৃঢ় সংকল্প।