জাতিকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই: ডা: শফিকুর রহমান

0

অতীতের সকল ভেদাভেদ ভুলে জাতিকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান।

তিনি বলেছেন, রাষ্ট্র যদি অন্যায়ের পক্ষ নেয় তবে মানুষের অধিকার ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলবে কে? তাই আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরে অতীতের সকল ভেদাভেদ ভুলে জাতিকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। ঐক্যবদ্ধ হয়েই জনগণের অধিকার আদায় করতে হবে। সেই সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে নাগরিকদের এখনই দেশে সঠিক নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দেশের মানুষের প্রয়োজনে যেকোনো আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী সবসময় মানুষের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ। শুধু তাই নয় সবার অগ্রভাবে জামায়াত ভূমিকা পালন করবে। সামনের সারিতে থেকেই দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই আমরা চালিয়ে যাবো।

তিনি ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত ‘স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এল ডি পি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অবঃ) ড. অলি আহমেদ (বীর বিক্রম), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর প্রতিক), জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর (সাবেক এমপি) ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইঊবী।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. মু শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে অ্যাডভোকেট ড. মো: হেলাল উদ্দিন, মু. দেলাওয়ার হোসাইন, মু. আবদুল জব্বার। আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, ফরিদ হোসাইন, শামসুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইন, অধ্যাপক নুর নবী, ড. আব্দুল মান্নান, শেখ শরিফ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে যখনই যারা দেশ পরিচালনা করেছেন তারা অবশ্যই কিছু না কিছু উন্নয়ন করেছেন। আমরা কারো অবদানকেই ছোট করে দেখি না। কিন্তু মনে রাখতে হবে মানুষ কোনো পেট সর্বস্ব জীব নয়। সে মর্যাদার সাথে এই দুনিয়ায় আশরাফুল মাকলুকাত হিসেবে জন্ম লাভ করেছে। সে ইজ্জত নিয়ে বাঁচতে চায়, মানুষের ইজ্জতই যদি সমাজে প্রতিষ্ঠিত না থাকে তাহলে আমি স্বাধীন দেশে পরাধীন হয়ে বাঁচতে চাই না। ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযেদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন দেশকে স্বাধীন করার জন্যে। এখন আবার আমাদেরকে লড়াই করতে হবে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এ সময় তিনি মহান স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। একইসাথে স্মরণ করেন স্বাধীনতার ঘোষণা যিনি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন সেই শহীদ জিয়াউর রহমানকেও। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদ এবং বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের প্রতি সম্মান জানান।

কর্নেল (অবঃ) ড. অলি আহমেদ বলেন, আমি একজন তরুণ যোদ্ধা হিসেবে রণাঙ্গনে দেশের মানুষের মুক্তির জন্য জীবন বাজি রেখেছিলাম। শুধুমাত্র দেশের স্বাধীনতা মান সমুন্নত করার প্রয়োজনে। ২৫ মার্চ রাতে আমরা বিদ্রোহ করেছিলাম। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে একত্রিত করে ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এদেশের মানুষ এখানকার শাসনভার পরিচালনা করবেন, জনগণ তার অধিকার ফিরে পাবেন। অথচ আজ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই স্বপ্ন ম্লান হয়ে গেছে। আবার তরুণদেরকে জেগে উঠতে হবে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অটুট রাখতে অবদান রাখতে হবে।

মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ ইব্রাহিম বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে আজ আমরা মুক্তিযোদ্ধারও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। রাজনৈতিক মতো পার্থক্যের কারণে আজ ১৯৭১ সালের সেই দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার প্রেরণা আমাদের মাঝেও নেই। যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম আজ আমরা নিজেরাও তা ভুলে গেছি। বিগত ৫০ বছরের তুলনায় গত ১৪ বছরে আমরা যা দেখেছি সেখানে কেবল বিভাজনে রাজনীতি করা হয়েছে। দেশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে সকলকে এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, স্বাধীনতার ৫০বছর পরেও আজ দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। এখনই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দেশের স্বাধীনতার জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। দেশে বিভাজনের রাজনীতি করার মাধ্যমে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা রুখে দিতে হবে। আজ দেশ একটি করদ রাজ্যে পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। সে লক্ষ্যে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন ও দেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দেশকে একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং বসবাসের উপযোগী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দল মত ভুলে দেশের সকল জনগণকে সেই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানের শেষে ‘স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রতিযোগিতাগুলোর বিজয়ীদের মধ্যে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট, বইসহ অন্যান্য পুরস্কার প্রদান করা হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com