বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দল মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দল মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের নেতারা।
রবিবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তারা এ আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কোরআন তিলাওয়াতের পরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন। পরে কল্যাণ পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বাসদের খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, মাওলানা ক্বারী আতাউল্লাহ হাফেজ্জি, মাওলানা আমিরুল ইসলাম বেলালী প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক বলেন, ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতায় থাকা সরকারের স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড থেকে মুক্তির তাড়নায় দেশবাসী ছটফট করছে। গণতন্ত্রহীনতার বিভীষিকা থেকে জাতি মুক্তি চায়। গুমড়ে কাঁদছে লাখো রাজনৈতিক কর্মীদের পরিবার। জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন পাগলা ঘোড়া জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে দিচ্ছে। বিজয়ের আনন্দ আজ দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। কোথায় সেই প্রাণচাঞ্চল্য? মানুষ এখন দু’বেলা খাবার জোগাড়ের সংগ্রামে লিপ্ত।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আমার নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ পত্র দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার কোনও সদুত্তর নেই। আজকের সভা থেকে আবারো জোর দাবি করছি অতিদ্রুত, সম্ভব হলে আজকেই নির্বাহী আদেশবলে খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হোক।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, কল্যাণ পার্টি চলমান পশ্চাদপদ রাজনীতিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছে। আমরা দেশবাসীকে সাথে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবী। সেই লক্ষ্যে দেশ বিদেশের পণ্ডিত ও জ্ঞানী গুণীদের কল্যাণ পার্টিতে সংযুক্ত করা হচ্ছে। কল্যাণ পার্টি আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে রাজনীতির গতিপথকে জনমূখী করবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে বিনির্মাণ করবে। প্রবাসী বান্ধব নীতি ও কর্ম বাস্তবায়নে অধিকতর মনোযোগী হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইনমন্ত্রী প্রায়ই আইনি প্রক্রিয়ার কথা বলে। কোন আইনি প্রক্রিয়ায় জাস্টিস সিনহাকে দেশ থেকে বের করে দিয়েছিলেন? এবং কেন জজ কোর্টের জজ সাহেবকে প্রাণের ভয়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে? এটার কোনো উত্তর দিতে পারেননি আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আজকে আইন, জজ, বিচারক, প্রশাসন সবকিছু শেখ হাসিনার আঁচলে বন্দী। কোনো নিরপেক্ষ বিচার নেই। আপনি (আইনমন্ত্রী) বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে। যে মামলার কোনো স্বাক্ষর নেই, কোনো প্রমাণ নেই, অন্যায় ভাবে সেই মামলা সাজা দিয়েছেন। এই অন্যায় সাজার কাছে বেগম খালেদা জিয়া মাথা নত করবেন না।
জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল হালিম বলেন, আমরা সব সময় সম্প্রীতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী। বর্তমানে বাংলাদেশে বিভক্তি এবং বিভাজনের রাজনীতি চলছে। প্রতিহিংসার রাজনীতি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। আজকে দেশে জালিম সরকার রয়েছে। এর থেকে বাঁচতে হলে দল মত নির্বিশেষে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার চিকিৎসা বিদেশে ছাড়া সম্ভব নয়। আমরা বেগম জিয়াকে অবিলস্বে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করার আহবান জানাচ্ছি।
সভা শেষে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া করা হয়।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- এন ডি পির চেয়ারম্যান ক্বারী মো আবু তাহের, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড.ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, মাওলানা কামাল উদ্দিন জাফরী, মেজর অব. মো হানিফ, কল্যাণ পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য সৈয়দা ফোরকান ইবরাহিম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব, মো হাসান নাসির, ড. শাহেদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ, কর্নেল অব. মিয়া মো মশিউজ্জামান, মেজর জেনারেল অব. আমসা আমিন, এড. সৈয়দ এহসানুল হক, ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ প্রমুখ।