গণতন্ত্রপন্থী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসায় নিহিত ‘গণতন্ত্রের মুক্তি’ ‘দেশবাসীর মুক্তি’

0

মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সমাজে বেঁচে থাকতে হলে এই দুইটি জিনিষের অধিকার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সমাজে বেঁচে থাকতে হলে আমাদের ন্যায় ও সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। যেই সমাজের সকল মানুষের মধ্যে সমঅধিকার ও ন্যায়ের বিধান সুমন্নত নয় সেই সমাজের মানুষ মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। যে রাষ্ট্রে মানবাধিকার ও মোলিক অধিকার উপেক্ষিত সেই রাষ্ট্রের মানুষের জনজীবন অরক্ষিত। যখন একটি রাষ্ট্রের মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার অনুপস্থিত থাকবে সেখানে বেঁচে থাকার অধিকার কোনঠাসা হয়ে পড়বে। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের কিছু অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া থাকে। এ অধিকারগুলো দেশের সংবিধানে বলা থাকে। সংবিধানে উল্লিখিত অধিকারগুলোই একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার।

উপরের উল্লেখিত সংবিধাননুযায়ী এটাই স্পষ্ট হচ্ছে যে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে তাকে তাঁর সুচিকিৎসা পাওয়ার যে মৌলিক অধিকার রয়েছে তা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে ইতিমধ্যে তাঁর পরিবার, নিজ দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু সরকার রাজি নয়। বরং আইনের দোহাই দিচ্ছে। কিন্তু জীবনের চেয়ে আইনের ধারা কখনোই বড় হতে পারে না, এটাই বিশ্বাস করে দেশের আপামর জনতা।

আর সেই জনতার বিশ্বাসের সাথে সরকারের মন্ত্রীসভার সদস্যরা কখনো তামাশা করছে আইনের বাধা রয়েছে বলে, কখনোবা তামাশা করছে দেশে ভালো ডাক্তার রয়েছে বলে। বিএনপির একজন ক্ষুদ্রতম কর্মী হিসেবে নয় বরং দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার প্রশ্ন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রী কেন অসুস্থ্য হলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে ছুটে যান?

তাদের জন্য কি তাহলে দেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই? না আমি উত্তরে ধরে নিবো রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ মন্ত্রী, এমপিরা বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে প্রমাণ হয় জনগণের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ? আর সেই ব্যর্থতার পরিচয়বহনকারী বর্তমান সরকার প্রধানের গল-ব্লাডার অপারেশন, রাষ্ট্র প্রধানের চোখের চিকিৎসা বিদেশে হলে জনগণ চিকিৎসা পাবে কোথায়?

যাই-হোক আমি আজকে আমার লিখায় সেই ব্যর্থতার পরিচয়বহনকারীদের নিয়ে আলোচনা করবো না, করবো না কোনো রাজনৈতিক পরিমন্ডল নিয়ে। আমার আজকের আলোচনা হচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে। সংবিধানে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, জনস্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, বিশ্রাম ও চিত্ত বিনোদন এবং সামাজিক নিরাপত্তার মত অর্থনৈতিক ও সামাজিক মানবাধিকারসমূহ এবং নাগরিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সুরক্ষার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর সেই বিধানে অন্তর্ভুক্তনুযায়ী খালেদা জিয়া বাংলাদেশের একজন প্রবীণ নাগরিক হিসেবে, দেশের অন্যতম প্রধান একটি দলের নেতা ও কয়েকবারের জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যেকোনো বিচারেই জরুরি ভিত্তিতে সুচিকিৎসা পাওয়ার অধিকারী। আর এটা একটা জরুরি মানবাধিকারের প্রশ্ন।

পরিশেষে বলতে চাই দেশ ও রাজনীতির স্বার্থে সংকীর্ণতা ও বিভাজনের সংস্কৃতি থেকে সরকারকে বেরিয়ে এসে অবিলম্বে জনগণের ভোটে নির্বাচিত তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারকেই যথার্থ উদ্যোগ গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। আর এ জোর দাবি বিএনপির রাজনীতির জন্য নয় গণতন্ত্রহীন দেশের জনগণের জন্য। কারণ দেশের জনগণের কাছে খালেদা জিয়া সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাই নন বরং তিনি দেশনেত্রী পরিচয়ে জনগণের হৃদয়ের মণিকোঠায় ঠাঁই নিয়েছে, আর তাঁর জন্যই জনগণের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসায় নিহিত গণতন্ত্রের মুক্তি। দেশবাসীর মুক্তি।

-ডালিয়া লাকুরিয়া

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com