চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের আওয়ামী লীগ মনোনীত একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চাচ্ছেন। এজন্য প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র উঠিয়ে নিতে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনী মাঠে কোনো প্রার্থী না থাকলে তার ১৫-২০ লাখ টাকা বেঁচে যাবে, তা না হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে শক্রতা সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নৌকার ওই প্রার্থীর নাম আবু ইউসুফ ছৈয়াল। তিনি সদর উপজেলার ২০ নম্বর চররমনী মোহন ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, চর দখলসহ বিভিন্ন মামলাসহ বহু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) রাতে সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের মজুচৌধুরীর হাট পূর্ব বাজারে নির্বাচনী এক সভায় তিনি প্রতিপক্ষ ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী সালেহ আহম্মদকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে প্রকাশ্যে হুমকি দেন।
অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও ফুটেজে হুমকি দিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে চেয়ারম্যান ছৈয়ালকে। এ সময় আওয়াম লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তার এমন হুমকিতে সাধারণ ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন- দল থেকে নৌকা প্রতীক পেলেও এলাকায় বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে তার জনপ্রিয়তা তলানিতে। তার দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে এলাকার সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে ভেতরে ভেতরে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে পরাজয় নিশ্চিত জেনে নির্বাচনী মাঠে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী রাখতে চাচ্ছেন না তিনি।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। দুর্গম এলাকা হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা এবং আত্মীয়-স্বজনরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ছৈয়াল ও তার ভাতিজাদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। সর্বশেষ গত ১৬ জুন আব্দুস সহিদ নামে এক জেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল ও তার ছেলে আবু সুফিয়ানসহ ১৩ জনের নামে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
চুরির অপবাদ দিয়ে চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়ালের নির্দেশে আমীর হোসেন নামে এক কৃষককে গাছে বেঁধে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর তাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। দুটি মামলায় বেশির ভাগ আসামিই চেয়ারম্যানের আত্মীয়-স্বজন।
একই বছরের ২২ জুলাই সুমাইয়া ইসলাম শান্তা নামে তার পুত্রবধূ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুানাল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় চেয়ারম্যান ছৈয়াল ও তার ছেলে আবু সুফিয়ানকে আসামি করা হয়।