ভোটগ্রহণের ৮ দিন পর মিলল সিলমারা ৫২৭ ব্যালট
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ইউপি নির্বাচনের ৮ দিন পর একটি বিদ্যালয়ের ছাদে সিলমারা ৫২৭টি ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। শনিবার উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নের সেহরাতৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ থেকে সিলমারা তালগাছ প্রতীকের এসব ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় দেলদুয়ারের ডুবাইল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনের আট দিন পর শনিবার এ ইউনিয়নের সেহরাতৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদে তালগাছ প্রতীকে সিলমারা ৫২৭টি ব্যালট পেপার পাওয়া যায়। এ নির্বাচনে তালগাছ প্রতীকে বিউটি আক্তার এক হাজার ৫৩০টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন।
এক হাজার ৯১৯টি ভোট পেয়ে সংরক্ষিত এ ওয়ার্ডে মাইক প্রতীকে নির্বাচিত হন রাশেদা বেগম। বিউটি আক্তারের জয়ের জন্য ভোটের ব্যবধান ছিল ৩৮৯টি। বিউটি আক্তারের পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে তার পক্ষে তিনিসহ আশেপাশের লোকজন ভোট ভিক্ষা করেন ভোটারদের কাছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ১১ নভেম্বর উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নে দ্বিতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তালগাছ প্রতীকের নারী সদস্য প্রার্থী বিউটি আক্তার ৩৮৯ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান।
নির্বাচনের আট দিন পর শনিবার সকালে ইউনিয়নের সেহরাতৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদে শিশু শিক্ষার্থীরা খেলতে গিয়ে ব্যালট পেপারগুলো দেখতে পায়। তারা বিষয়টি শিক্ষকদের জানায়। পরে শিক্ষকরা স্থানীয়দের জানালে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তালগাছ প্রতীকের প্রার্থী বিউটি আক্তার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় ব্যালট পেপার দেখে বিউটি আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী সদস্য পদে মাইক প্রতীকের প্রার্থী রাশেদা বেগম ১ হাজার ৯১৯ ভোট পেয়ে জয়ী হন।
তালগাছ প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী বিউটি আক্তার বলেন, ‘নির্বাচনে আমাকে ৩৮৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত দেখানো হয়। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আট দিন পর আমার নিজ কেন্দ্রের বিদ্যালয়ের ছাদে তালগাছ প্রতীকের সিলমারা ৫২৭টি ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। এই ব্যালট পেপারগুলো একত্রিত করলে আমি দুই শতাধিক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হতাম। নির্বাচনে ফেল করানোর জন্যই সংশ্লিষ্টরা আমার প্রতীকের সিলমারা ব্যালট পেপার বিদ্যালয়ের ছাদে রেখে দেয়। পরে ভোট গণনা করে আমাকে ফেল দেখানো হয়। বিষয়টি নিয়ে আমি আদালতে যাবো।’
দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানান, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। ওই কেন্দ্রে ভাসানী ডিগ্রি কজেলের অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। এ ঘটনায় আমাদের কিছু করার নেই।’
দেলদুয়ার থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, বিষয়টি শুনেছি। এটা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার ভালো বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার এ এইচ এম কামরুল হাসান জানান, নির্বাচনে আপিলের সুযোগ আছে তিনি ইচ্ছে করলে আপিল করতে পারবেন। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কারো গাফলতির কারণে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।