৪০১ ধারায় সরকারের সম্পূর্ণ অধিকার আছে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার: ফখরুল
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। আর তা না হলে আজকে থেকে আপনাদের পতনের আন্দোলন শুরু হলো।
শনিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি ও বিদেশের উন্নত চিকিৎসার দাবিতে গণঅনশনে তিনি কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আজকের এ গণঅনশন থেকে সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। আর তা না হলে গণঅনশনের মধ্য দিয়ে আজকে আন্দোলন শুরু হলো, সরকার পতনের।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা আমাদের জীবন-মরনের সমস্যা। আমাদের অধিকারের সমস্যা। ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম সে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার সমস্যা।’
‘খালেদা জিয়া দেশের মাটির সাথে অবিচ্ছেদ্য। আমাদের মা এবং মাটি বলতে খালেদা জিয়াকে বুঝি। এ নেত্রীকে অবশ্যই আমাদের মুক্ত করতে হবে। তার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত আছি,’ বলেন তিনি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আসুন দুই হাত তুলে শপথ গ্রহণ করি, দেশনেত্রীকে তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
বিএনপি মাহসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আজকে এত অসুস্থ, তিনি আজকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমি ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছি বারবার, বিদেশী ডাক্তারদের সাথে কথা বলেছি, তারা বলেছেন বাংলাদেশে যা চিকিৎসা দেয়া সম্ভব এখানে তারা তা দিচ্ছেন, দিয়েছেন। তার কিছু জটিলতা আছে বিদেশে আরো অ্যাডভান্স সেন্টার ট্রিটমেন্ট না হলে তাকে সুস্থ করা যাবে না। তার পরিবার থেকে আবেদন জানানো হয়েছিল তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্য, তারা সে সুযোগ দেয়নি। ফিরিয়ে দিয়েছে। উপরন্তু পার্লামেন্টে সংসদ নেত্রী এমন ভাষায় কথা বলেছেন, যে ভাষা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এবং মিথ্যাচর করেছেন আইনমন্ত্রী। ৪০১ ধারায় সরকারের সম্পূর্ণ অধিকার আছে। এবং এটা তাদের দায়িত্ব। নির্দেশ দিয়ে বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে অনশন কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আযম খান, শামসুজ্জামান দুদু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের আহ্বায়ক হাসান জাফির তুহিন সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুল হক খোকন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
এছাড়াও মিত্র দলের জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার চৌধুরী বুলবুল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
কর্মসূচি ঘোষণা
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে আগামী ২২ নভেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমদের সমাবেশ। একইসাথে সারা দেশে মহানগর, জেলা এবং উপজেলাগুলোতে সমাবেশ হবে। আমরা আবারো এই দাবি নিয়ে সামনে আসবো। তারপরও যদি না হয় আবারো কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।