ওসি প্রদীপের নেতৃত্বেই সিনহাকে হত্যা করা হয়
গতকাল মঙ্গলবার একই আদালতে মামলার এই তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, পিপি ফরিদুল আলমসহ তিনজন আইনজীবী। সাক্ষ্য শেষে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তাঁকে (খাইরুল) জেরা করেন আসামিপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী। সময়ের অভাবে তখন অন্য আইনজীবীরা জেরা করতে পারেননি। আজ সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জেরা। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত সময়েও জেরা চলছিল। আসামিপক্ষের আইনজীবী আছেন অন্তত ১৩ জন।
আজ বুধবার বিকেলে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জেরার জবাবে এসব কথা তুলে ধরেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম।
তদন্তকারী কর্মকর্তার পরবর্তী জেরা এবং অন্যান্য সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালত অষ্টম দফার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন ২৯ ও ৩০ নভেম্বর এবং ১ ডিসেম্বর। সপ্তম দফায় এ মামলার ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন ৬৫ জন।
জেরার সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ১৫ জন আসামি। সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে ১৫ আসামিকে আদালতে আনা হয়।
সিনহা হত্যা মামলায় সপ্তম দফায় সাক্ষ্য দিলেন আরও পাঁচজন
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, আজ সকাল থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আসামিপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলামকে জেরা করেছেন। জেরার জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে এবং মামলার ১৫ জন আসামির যোগসাজশে সিনহা মো. রাশেদ খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সরেজমিন ঘটনার তদন্ত করে তিনি যা পেয়েছেন, সেটাই তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন। তদন্তকারী এই কর্মকর্তার জেরা চলমান।
সিনহা হত্যা মামলায় এক গৃহবধূ ও সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যের সাক্ষ্য গ্রহণ
আইনজীবীরা বলেন, প্রথম দফায় গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তিন দিনে এ মামলার সাক্ষ্য দেন দুজন। তাঁরা হলেন মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে গাড়িতে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাত। দ্বিতীয় দফার ৪ দিনে সাক্ষ্য দেন ৪ জন, তৃতীয় দফার ৩ দিনে ৮ জন, চতুর্থ দফার ২ দিনে ৬ জন, পঞ্চম দফার ৩ দিনে ১৫ জন এবং ষষ্ঠ দফায় ৩ দিনে ২৪ জন এবং সপ্তম দফার ৩ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৬ জন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
সিনহা হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিচ্ছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।
সূত্র: প্রথম আলো