দেশের নিপীড়িত শোষিত মানুষের মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার একমাত্র তরুণদের পক্ষেই সম্ভব

0

বাংলাদেশের তরুণদের রয়েছে গৌরবজ্জল ইতিহাস। বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন, প্রতিটি অর্জনের পিছনে রয়েছে তরুণ সম্প্রদায়ের অবদান, তাদের আত্মত্যাগের ইতিহাস। আবার এই তরুণ সম্প্রদায়কে ভুল পথে পরিচালনার নজীরও রয়েছে। কখনও বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে, কখনও বা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে ভুল পথের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালারা তরুণদের করেছে বিপথগামী। তাই সিদ্ধান্ত তরুণ সম্প্রদায়কে নিতে হবে তারা কেমন বাংলাদেশ দেখতে চায়? কেমন নেতৃত্বের কাছে সঁপে দিতে চায় আগামীর বাংলাদেশকে? এই তরুণ সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে আমাদের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।

একটি স্বাধীন দেশে নাগরিকের শুধু অধিকারই থাকে না, তার দায়িত্ব-কর্তব্যও থাকে। রাজনীতিকে কার্যকর ও জনকল্যাণমুখী করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে অবদান রাখা যার অন্যতম দায়িত্ব-কর্তব্য। আর এই লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়াও এই দায়িত্ব-কর্তব্যের আওতাভুক্ত। তাই যত বেশিসংখ্যক মেধাবী তরুণ রাজনৈতিক সচেতনতাবোধের ভিত্তিতে মতামত প্রকাশ ও কার্যকর উদ্যোগ নেবেন, রাষ্ট্রের ভবিষ্যতের জন্য তত বেশি মঙ্গলকর হবে। আর এই ধারাবাহিকতায় দেশের তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক চর্চা বৃদ্ধি করাই এখন রাজনীতিবিদদের কর্তব্য। কেননা তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক চর্চা যতই বৃদ্ধি হবে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন ততই প্রকোপ হবে। আর এখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারই হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড অটুট রাখার নিশ্চয়তা। আর এ ভূখণ্ডে ক্ষমতাসীনদের বন্দুকের নলের নিচে চাপা পড়েছে গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার।

দেশের গণতন্ত্র মানে জনগণের শাসন। আভিধানিক অর্থে গণতন্ত্র বলতে কোনো জাতিরাষ্ট্রের এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে নীতিনির্ধারণ বা সরকারি প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিক বা সদস্যের সমান ভোটাধিকার থাকে। গণতন্ত্রে আইন প্রস্তাবনা প্রণয়ন ও তৈরির ক্ষেত্রে সব নাগরিকের অংশগ্রহণের সমান সু্যোগ রয়েছে, যা সরাসরি বা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে হয়ে থাকে। অথচ বিনাভোটে নির্বাচিত হয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা সেই গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। জনগণের সব ধরনের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেশে একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। মানুষের বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছে। দেশে ধর্ষণ, গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বেড়েই চলেছে। সেইসাথে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এমতাবস্থায় সরকার, সরকারি দল আর তাদের অনুগত আমলা, প্রশাসন দুর্নীতি আর অপশাসনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে পুরোপুরি ধ্বংস করার পায়তারা ও বহুমুখী ষড়যন্ত্র করছে। আর সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ সকল বিরোধী শক্তির উপর অত্যাচার, দমন, পীড়ন, নির্যাতন, জেল, জুলুম চালিয়ে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে।

আর এই ফ্যাসিবাদের কবল থেকে দেশের নিপীড়িত শোষিত মানুষের মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সফলতা লাভ করা একমাত্র তরুণদের পক্ষেই সম্ভব। তাই দেশকে পুনরুদ্ধার করে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তোলার সংগ্রামই এখন তরুণদের র্তমান সময়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

পরিশেষে তরুণদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, হে বাংলার তরুণ মনে রেখো দেশটা যদি হয় সবার, তবে তোমারও রয়েছে দায়ভার। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এখন-ই সময় রুখে দাঁড়াবার।

-ডালিয়া লাকুরিয়া

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com