আ.লীগে পায়ের নিচে মাটি নেই, তাঁরা জনগণের কাছ থেকে যোজন যোজন দূরে চলে গেছে: ফখরুল

0
শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগে দেশে আর কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার নির্বাচন নির্বাচন করে। আমরা ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দেখেছি, কিভাবে তারা জোর করে ফলাফল ঘোষণা করেছে। ২০১৮ সালে আগের রাতের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেখেছি। এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এমন একটা সরকার আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপে বসে আছে, যাদের জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। যারা ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্বাচনের আগের রাতে নির্বাচন করে। বিরোধীদলকে কোনো রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
আওয়ামী লীগ একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি এই কথাটা সবসময় বলি যে, রাজনৈতিকভাবে কতটা দেউলিয়া হলে, পুলিশের সাহায্য নিয়ে বিরোধী দলের অফিস বন্ধ করে দিয়ে তাদের রাজনীতি করতে হয়। এত নাকি মেগা প্রজেক্ট, মেগা উন্নয়ন করছে, তা মানুষের প্রতি আস্থা নেই কেন? মানুষের প্রতি ভালোবাসা নেই কেন, তোমাদের (আ. লীগের) আসলে কোনো ভিত্তিই নেই। তোমরা (আ. লীগ) জনগণের কাছ থেকে যোজন যোজন দূরে চলে গেছো। তোমরা (আ. লীগ) শুধু লাঠি-বন্দুক-পুলিশ দিয়ে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছো।
গতকাল শনিবার (১৩ নভেম্বর), বিকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার নয়াবাজারে নবাব ইউসুফ মার্কেটে দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ৩৪ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মীসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মীসভায় উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, সত্যিকার অর্থে যারা দায়িত্ব নিতে পারবেন, নেতৃত্ব দিতে পারবেন তাদেরকেই দিয়েই নেতৃত্ব তৈরি করবেন। আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ ঘরে ঘরে মানুষকে তৈরি করেন। মানুষের কাছে যান। মানুষকে গিয়ে বলেন, এই অন্যায় অত্যাচার আর সহ্য করা যাবে না, এসবের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তাহলে দেখবেন, সমস্ত মানুষ একদিন রাজপথে বেরিয়ে আসবে। এবং সকল অন্যায় অত্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা একটা কঠিন সংগ্রামে আছি। এই সংগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রাম। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে একটা স্বাধীন দেশে বাস করতে পারে তার জন্য সংগ্রাম। দেশে আজ কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই। স্বাধীন দেশ বলতে কিছু নেই-এটাকে আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। কোথাও কারো কোনো নিরাপত্তা নেই। মানুষকে শান্তি দেবে, সেদিকে সরকারের কোনো নজর নেই। তাদের নজর হচ্ছে জনগণের পকেট কাটার দিকে। এমন দেশ তো আমরা চাইনি।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, পদত্যাগ করেন এবং একটি নির্দোলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন দিন। তা না হলে দেশের জনগণ আপনাদের ঝেটিয়ে বিদায় করবে, পালাবার পথও খুঁজে পাবেন না। আমরা কথার কথা বলছি না। আমাদের ওপর গত ১৫ বছর ধরে নির্যাতন চলছে। আমাদের ৩৫ লক্ষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক লক্ষের ওপরে মামলা, ৫শ অধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। ধরে নিয়ে গুলি করে পঙ্গু করা হয়েছে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এরপরও একটা লোককেও তারা নিতে পারেননি। এটা আমাদের ইমানের জোর। আমরা আল্লাহ্ ছাড়া আমাদের অন্য কাউকে ভয় করার কারণ নেই। আমরা যে সংগ্রাম করছি-এটা হচ্ছে ন্যায়ের পথে সত্যের পথে আমাদের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য। সুতরাং আমাদের বিরত করার কোনো পথ নেই।
সরকারকে ‘মর্মান্তিক ও ভয়বহ’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেতা গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তাঁর ছোট ভাই ম্যাডামের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। চিকিৎসকরাও বলেছেন, ম্যাডামের বিদেশে উন্নত চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি দরকার। কিন্তু সেই অনুমতি সরকার দেয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সম্মিলিত ঐক্যের মধ্যদিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। এবং তার উন্নত চিকিৎসা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করব।
তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com