বাংলাদেশে কাজ হারাতে পারেন ৫০ লাখ মানুষ, আশঙ্কা আইএলও-র
বাংলাদেশে কাজ হারাতে পারেন প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। চলতি বছরেই এত সংখ্যক মানুষ বেকার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করল আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা আইএলও। করোনা মহামারির প্রকোপ শুরু হওয়ার আগের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে এই আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছে আইএলও।
গত সপ্তাহে ‘আইএলও মনিটর কোভিড-১৯ এবং শ্রমবিশ্ব’ নামক এক প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগের বছরের তুলনায় ‘শ্রম কর্মঘণ্টা’ কমেছে ১১.৯%। চলতি বছরে এটা আরও ৭% কমতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। করোনার কারণে বাংলাদেশে ই-কমার্স ছাড়া অন্যক্ষেত্রে নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়েনি। এই মহামারীর কারণে চাপ পড়েছে অর্থনীতির উপরে। ফলে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ।
আইএলও-র হিসাব অনুযায়ী, করোনার কারণে বিশ্বের প্রায় ১৯ কোটিরও বেশি মানুষ তাঁদের কাজ হারাতে চলেছেন। তার মধ্যে ১২ কোটির বেশি মানুষ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির বাসিন্দা। এমনকি এই বছরে বাজেট পেশ করার সময়েও বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, করোনার কারণে অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। তবে, তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে ওপার বাংলায় কাজ হারাতে পারেন প্রায় ১৪ লাখ মানুষ ।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের হিসেবে, করোনার কারণে বাংলাদেশে চাকরি বা কাজ হারাতে পারেন প্রায় দেড় কোটি মানুষ। যদিও অনেক সংস্থায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছে করোনার কারণে বাংলাদেশে কাজ হারাতে পারেন ২ কোটির বেশি মানুষ। ফলে ওপার বাংলায় ৫০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
এদিকে, আইএলও তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে করোনার প্রভাব শুরু হওয়ার পরে তাঁরা বিভিন্ন দেশের কর্মসংস্থান নিয়ে নিয়মিত তথ্য নিয়েছে। তাদের মতে, গত বছরের শেষ দিক থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে চলতি বছরেও বিশ্ব শ্রমবাজার বা কাজের সুযোগ ‘স্ট্যাগন্যান্ট’ বা অচল হয়েই রয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় চলতি বছরে কর্মঘণ্টা ৪.৭% কম। যা প্রায় ১৪ কোটি শ্রমিকের সমান।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কাজের জগতের এই পার্থক্য উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বৈষম্য আরও বাড়িয়েছে। করোনা পরিস্থিতি থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রেও এই বৈষম্য প্রকট হচ্ছে। যারফলে সার্বিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার আরও দেরি হতে পারে। অন্যান্য দেশের মতই এই আঘাত এসেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলিতে। সূত্র: টিওআই।