রামকৃষ্ণ অশিক্ষিত, রবীন্দ্রনাথও বেশি দূর পড়েননি: বিজেপি নেতা
বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য বরাবরই আলোচিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি-র সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফের নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি এক প্রশ্নের জবাবে রামকৃষ্ণ আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কথা বলেছেন বিজেপি-র এই সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি।
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রামকৃষ্ণ দেব সবচেয়ে বড় অশিক্ষিত। অথচ তার বাণী নিয়েই সমাজ এগিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও তো বেশি দূর পড়াশোনা করেননি। মাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। এটাই ভারতের সংস্কৃতি।’
সম্প্রতি, দিলীপের সঙ্গে রাজ্যে বিজেপি-র আরেক সাবেক সভাপতি তথাগত রায়ের মন্তব্য পাল্টা-মন্তব্যের তরজা চলছে। একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। তথাগত সম্প্রতি দিলীপকে ‘অশিক্ষিত’ বলে কটাক্ষ করেন। তার প্রেক্ষিতেই রবিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে জবাব দিতে গিয়ে রামকৃষ্ণ-রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে মন্তব্য করেন দিলীপ। তার ভাষায়, ‘কে কয়টা বই পড়েছেন, কার কয়টা ডিগ্রি আছে, আমাদের দেশে এটা কেউ ভাবেননি। সবচেয়ে বড় অশিক্ষিত তো রামকৃষ্ণ দেব ছিলেন। অথচ সবার বাড়িতে তার বই রয়েছে। তার বাণী নিয়েই এগিয়েছে।’
একই সঙ্গে দিলীপের সংযোজন, ‘রবীন্দ্রনাথও খুব বেশি দূর লেখাপড়া করেননি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন মাত্র। এটা ভারতের সংস্কৃতি। যারা দেশকে চিনতে পারেন না, সেটা তাদের দায়।’
দিলীপ মূলত তথাগতকে জবাব দিতে গিয়ে এমন মন্তব্য করলেও তাকে নিশানা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের প্রবীণ এমপি সৌগত রায় বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ নিজেই অশিক্ষিত। তাই দলের রাজ্য সভাপতি পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, শনিবার তথাগতকে ‘দল ছেড়ে দিন’ বলে তোপ দেগেছিলেন দিলীপ। বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি-র ভরাডুবির পর দিলীপ ছাড়াও কয়েক জন কেন্দ্রীয় নেতার সমালোচনায় সরব হন তথাগত। তারই প্রেক্ষিতে রবিবার দিলীপ বলেন, ‘কত দিন আর লজ্জা পাবেন। দল ছেড়ে দিন। যারা দলের জন্য কিছুই করেননি, যাদের দল সবচেয়ে বেশি দিয়েছে, তারাই সবচেয়ে বেশি দলের ক্ষতি করেন। আমাদের দুর্ভাগ্য এটা।’
এর পাল্টা তোপ দাগেন তথাগতও। ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন। এই ক্রমাগত রক্তক্ষরণ বঙ্গ বিজেপি-র জন্য ঠিক নয়। দিলীপ ঘোষ আমাকে উপদেশ দিয়েছিলেন, দলত্যাগ করার জন্য যদি আমি দলকে নিয়ে লজ্জিত হই। আমি তার কথায় গুরুত্ব দিই না। আমি এখন দলের এক জন সাধারণ সদস্য। আামি এইভাবেই থাকবো এবং দলকে সঠিক পথ রাখার চেষ্টা করবো।’
সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘এর জবাবে আমি যা বলতে পারি, তা দিলীপ ঘোষের বোধগম্য হবে না। অশিক্ষিত হলে যা সমস্যা হয়। আমি কিছুই বলবো না। কারণ সেটা পণ্ডশ্রম হবে। আমি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিচ্ছি না।’
তারই প্রেক্ষিতে রামকৃষ্ণ, রবীন্দ্রনাথের উদাহরণ টেনেছেন দিলীপ। এটা নিয়েও কটাক্ষ করে তথাগত টুইটারে লিখেছেন, ‘হায় ঈশ্বর! বাঙালি হিন্দু পরিবারে জন্মে অবতারবরিষ্ঠ ঠাকুর রামকৃষ্ণ আর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের নামে এ-ও শুনতে হলো?’ সূত্র: আনন্দবাজার।