‘ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জকে জিম্মি করে রেখেছে’
ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জকে জিম্মি করে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি।
তিনি বলেছেন, সরকার নিজের ব্যর্থতা রাষ্ট্রের কাঁধে চাপিয়ে রাষ্ট্রকেই আজ প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেউলিয়া করে দিতে চাচ্ছে। যে ওসমান পরিবার ত্বকী হত্যাসহ বহু অপকর্মের জন্মদাতা, তাদের সরকার বিভিন্ন সময় পুরস্কৃত করেছে।
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১০৪ মাস উপলক্ষে সোমবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোক প্রজ্বলন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিউর রাব্বী বলেন, আমরা প্রশ্নবিদ্ধ বিচার ব্যবস্থার অবসান চাই। সাগর-রুনী, তনু এবং নারায়ণগঞ্জের সব হত্যার বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, সরকার বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জনগণের মৌলিক অধিকারের সব প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে প্রতিনিয়ত সংবিধানকে লঙ্ঘন করে চলেছে। ১০৪ মাস অতিবাহিত হলেও ত্বকী হত্যার তৈরি করে রাখা অভিযোগপত্রটি আদালতে পেশ না করা শুধু বিচারহীনতার নজিরই নয়, এটি সরকারের দেউলিয়াপনার উদাহরণ।
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ বলেন, সরকার ত্বকী হত্যার বিচারে ইনডেমনিটি জারি করেছে, ত্বকীর ঘাতক পরিবারকে পুরস্কৃত করছে। ত্বকী হত্যার বিচারের সঙ্গে সুশাসনের সম্পর্ক জড়িত। আমরা ত্বকীসহ সব হত্যার বিচার চাই।
সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় বলেন, মানুষ আজ দেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ত্বকী হত্যার বিচার চাচ্ছে, সব হত্যা-খুন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরা আশা করবো সরকার মানুষের এ দাবি ও প্রতিবাদের ভাষাকে বুঝবে, সব হত্যার বিচার নিশ্চিত করবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, বাসদের জেলা সংগঠক আবু নাইম খান বিপ্লব, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুর সুজন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ সাচ, সামাজিক সংগঠন সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ সেলিম, সদস্য মনি সুপান্থ ও পিন্টু সাহা।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। এর দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজও আদালতে পেশ করা হয়নি। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।