বাকশালের প্রেতাত্মার ঘৃণ্য থাবায় গোটা জাতি আজ বিক্ষুব্ধ: মঞ্জু
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, ৭ই নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছিলাম। আইনের শাসন, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে এসেছিল। দেশ, জনগণ, স্বাধিকার সহ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের চেতনাবিরোধী সুগভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ৭ই নভেম্বর সিপাহী-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লবের মাধ্যমে জাতি পেয়েছিল এক যোগ্য নেতৃত্ব জিয়াউর রহমানকে, যিনি ‘৭১-এ জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। সফল রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়ে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন। সেজন্যই আমাদের জাতীয় জীবনে এই বিপ্লবের গুরুত্ব তাৎপর্যমন্ডিত।
গতকাল রবিবার (৭ নভেম্বর) ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দলীয় কার্যালয়ে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জু আরো বলেন, অবৈধ সরকারের চরম প্রতিহিংসার শিকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে দেশকে আবারো বাকশালী পরিস্থিতির মুখোমুখি করতে যে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে তা থেকে উত্তরণে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে। দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠার এক পর্যায়ে একদলীয় বাকশালী শাসনব্যবস্থায় রূপ পেয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর সেনাবাহিনীর একটি অংশ আধিপত্যবাদের ভাবনায় প্ররোচিত হয়ে তৎকালীন সেনাবাহিনীর চীফ স্টাফ অফিসার স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে।
তিনি ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিলেন। ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি মুক্ত হন। ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তকে রুখে দেয়ার জন্য অকুতোভয় সিপাহী জনতা এক ইস্পাত কঠিন ঐক্যে শপথবদ্ধ হয়ে ঐতিহাসিক বিপ্লব সংগঠিত করেন। জাতীয় জীবনে ৭ নভেম্বর এক ঐতিহাসিক দিন। কিন্তু আজকের বাংলাদেশে মানুষের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও জনগণের নিরাপত্তা কিছুই নেই। দেশ ও জাতি আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ চরম হুমকীর মুখে। ক্ষমতাসীন সরকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে গনতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছে।
বাকশালের প্রেতাত্মার ঘৃণ্য থাবায় গোটা জাতি আজ বিক্ষুব্ধ। তাই ৭ নভেম্বরের চেতনাকে ধারণ করে গণজাগরণ সৃষ্টির মাধ্যমে বর্তমানে অগণতান্ত্রিক সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সবাইকে রাজপথে নেমে আসতে হবে। একই সাথে ৭ই নভেম্বরের চেতনাই হচ্ছে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিশ্চিত করা, স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা, সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। গণতন্ত্র বর্তমানে একটি ঐতিহাসিক শব্দে পরিণত হয়েছে। কারণ দেশে গণতন্ত্র বলতে কিছুই নেই। দেশে চলছে একনায়তন্ত্রের আাধিপত্যবাদ। এমতাবস্থায় ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশপ্রেমিক জনতাকে এগিয়ে আসতে হবে।
মহানগর বিএনপির প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদ ও ওয়াহিদুজ্জামান রানার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি এস এম শফিকুল আলম মনা, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, আমির এজাজ খান, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, এড. বজলুর রহমান, এড. ফজলে হালিম লিটন, ইকবাল হোসেন, শাহজালাল বাবলু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, আব্দুর রাকিব মল্লিক, সিরাজুল হক নান্নু, আবু হোসেন বাবু, মো. মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, মাহবুজ্জামান কচি, মেহেদী হাসান দিপু, মুজিবুর রহমান, ইকবাল হোসেন খোকন, সাদিকুর রহমান সবুজ, নিজামউর রহমান লালু, গিয়াস উদ্দিন বনি, ইউসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ হোসেন পরাগ, সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সী, সাংবাদিক মিজানুর রহমান মিলটন, সাংবাদিক সোহরাব হোসেন, শামসুজ্জামান চঞ্চল, কাজী শফিকুল ইসলাম, নাজমুল হুদা সাগর, কামরান হাসান, শরিফুল ইসলাম বাবু, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, আবু সাঈদ শেখ,খায়রুল ইসলাম জনি, খন্দকার ফারুক হোসেন, কাজী মিজানুর রহমান, নাজির উদ্দিন নান্নু, জহর মীর, বদরুল আনাম, শেখ জামিল হোসেন, কাজী আব্দুল লতিফ, আফসার উদ্দিন মাস্টার, ইসাহাক মল্লিক, আকরাম হোসেন খোকন, মেজবাহ উদ্দিন মিজু, আব্দুর জব্বার, রবিউল ইসলাম রবি, জাহিদ কামাল টিটো, আসলাম হোসেন, শামসুর রহমান, আশরাফ হোসেন, আব্দুল আলিম, বাচ্চু মীর, মোস্তফা কামাল, আরমান হোসেন, আ. রহমান, মেহেদী হাসান সোহাগ, ইমতিয়াজ আলম বাবু প্রমূখ। আলোচনা শেষে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন মাওলানা আব্দুল গফ্ফার।