সেই ২ বাংলাদেশির মাথায় গুলির চিহ্ন
সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত থেকে উদ্ধার হওয়া দুই বাংলাদেশির মাথায় গুলির চিহ্ন মিলেছে।
মরদেহের সুরতহালে প্রাথমিকভাবে দুজনের মাথায় গুলি লাগার চিহ্ন মিলে।
এরমধ্যে একজনের মাথায় ও অপরজনের কপাল ভেদ করে গুলি বেরিয়ে গেছে।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ-ভারত সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্তে জিরো লাইনে ১৩৩০-৩১ মেইন পিলার সংলগ্ন এলাকায় বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক শেষে তিন দিন পড়ে থাকার পর মরদেহ দুটি ফেরত দেওয়া হয়।
উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের শনাক্ত মতে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে সুরতহাল করে কানাইঘাট থানা পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকালে নিহতদের মাথায় গুলির চিহ্ন দেখতে পান সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে দুজনের শরীরে গুলির চিহ্ন মিলেছে। একজনের মাথা ও অন্যজনের কপাল গুলি ভেদ করে বের হয়েছে।
তিনি বলেন, তিন দিন পড়ে থাকায় মরদেহ গলে গেছে। যে কারণে শরীরের আর কোথাও কোনো গুলি আছে কিনা ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।
গত বুধবার (৩ নভেম্বর) সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্তের ১৩৩১ পিলার সংলগ্ন এলাকায় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হন। নিহতরা হলেন- কানাইঘাট সীমান্তবর্তী এরালীগুল গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে আসকর উদ্দিন (২৫) ও একই গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে আরিফ উদ্দিন (২২)।
ঘটনার পর পুলিশ জানায়, গুলিতে নিহত দুই যুবক ছাড়াও আরও দু’জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আত্মগোপনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মাধ্যমে নিহতদের খোঁজ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিকেলের দিকে তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয় লালবাজারে যান। এরপর তারা আর বাড়িতে ফেরেনি। এরপর তিন দিন ধরে মরদেহ খোলা আকাশের নিচে পড়েছিল।
এ নিয়ে গত শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ডোনা সীমান্তের ১৩৩০ ও ৩১ পিলারের মধ্যবর্তী নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় বিবিজি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে নেতৃত্ব দেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষে ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোহেল আহমদ ও বিএসএফের পক্ষে ৯১ ব্যাটালিয়নের কমান্ডেন্ট রাউয়াত। বৈঠক শেষ হয় ওইদিন বিকেল সাড়ে ৫টায়।
পতাকা বৈঠক শেষে দুই বাংলাদেশির মরদেহ সীমান্তে জিরো লাইনের দেড়শ গজের ভেতর বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিততে শনাক্ত করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাদের শনাক্ত মতে মরদেহ দুটি কানাইঘাট থানা পুলিশ উদ্ধার করে। ওই বৈঠকে বিজিবি কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। বিজিবির প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ জানিয়েছিল ‘দুই বাংলাদেশি হত্যা সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না। ’