নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করলেই হত্যা করা হবে
ফরিদপুরের সালথায় বল্লভদী ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রচারণার মাইক ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা এবং নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিনের প্রচার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হামলার শিকার হওয়া ভ্যানের চালক জুয়েল সাংবাদিকদের জানান, আমি প্রচার মাইক নিয়ে ভড় বল্লভদী পুরান ভিটা নামক স্থানে গেলে নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলামের সমর্থক আউয়াল মুন্সি, জামাল ফকিরসহ তার লোকজন এসে আমার প্রচার মাইকের উপর হামলা করে। আমাকে চড়-থাপ্পড় মারে। পোস্টার ছিঁড়ে মাইক ভেঙে ফেলে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী খন্দকার শাহিন বলেন, নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে আমরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। পূর্বে যারা আমাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল, আজও তারাই আমার প্রচারের গাড়ি, সমর্থক ও মাইকের উপর হামলা চালায়। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসিকুজ্জামান বলেন, মাইক ভাঙচুরের ঘটনা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে নগরকান্দা উপজেলার ৭ নম্বর রামনগর ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. কাইমদ্দিন মণ্ডল। তার আনারস প্রতীকের পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা এবং সমর্থকদের নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নগরকান্দা থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (১ নভেম্বর) বিকেলে কৃষ্ণারডাঙ্গি গ্রামে এক প্রতিবাদ সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী কাইমদ্দিন মণ্ডল অভিযোগ করেন, শনিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রামনগরের হোয়াজেরডাঙ্গি মোসলেমের দোকানের সামনে পোস্টার লাগাতে গেলে নৌকার প্রার্থী মান্দার ফকিরের ছেলে সাখাওয়াত ফকিরের (৩৫) নেতৃত্বে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় রফিক (৪৫), শাজাহান (৫৫), রমজান (৪০) ও জিয়াউর (২৭) নামে তার কয়েকজন সমর্থককে মারধর করে। এছাড়া ল্যাংড়ার মোড় ও কুন্ডনগর বাজারসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে লাগানো পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে।
এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পর এসআই বশিরের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে।
শনিবার রাত ৮টার দিকে মান্দার ফকিরের আরেক ছেলে দেলোয়ার ফকিরের নেতৃত্বে হকিস্টিক ও লাঠিসোটা নিয়ে নৌকার প্রায় শতাধিক মোটর সাইকেলের বহর নিয়ে কুঞ্জনগর বাজার থেকে বাঙ্গাবাড়িয়ায় এসে আনারস সমর্থকদের নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করলে হত্যার হুমকি দেয় বলে কাইমদ্দিন মণ্ডল অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রচার কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা আতঙ্কগ্রস্ত। রোববার দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি সহায়তা কামনা করেন।
এ ব্যাপারে নৌকার প্রার্থী মান্দার ফকিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী এসব বানিয়ে বলছে। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।
এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিম রেজা বলেন, নির্বাচনের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ও বহর নিয়ে মহড়া দেওয়ার বিষয়টি রিটার্নিং অফিসারের দেখার বিষয়। তবে আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ থাকলে আমরা সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।