‘অবশ্যই পরিবর্তন আসবে’ হতাশার কোনো কারণ নেই: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘চতুর্দিকে শ্বাসরুদ্ধকর একটা অবস্থা, মানুষ পরিবর্তন চায়, তারা জিজ্ঞাসা করে ‘কবে এই অবস্থা থেকে বের হতে পারবে’। আমি বিশ্বাস করি ‘অবশ্যই পরিবর্তন আসবে’। হতাশার কোনো কারণ নেই।
শনিবার দুপুরে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী সংবর্ধনা গ্রন্থ’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই আমি যেহেতু রাজনীতি করি, একটা বড় দলের সাথে সম্পৃক্ত আছি, আপনারা আমাকেই জিজ্ঞাসা করবেন কবে এই অবস্থা থেকে বের হতে পারবো। আমি সরাসরি উত্তর দিতে চাই, আমরা অবশ্যই বের হতে পারবো। কারণ এদেশের মানুষ কখনোই পরাজয় বরণ করেনি। পাকিস্তান থেকে শুরু করে, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, মানুষ যখন জেগে উঠেছে তখন অবশ্যই পরিবর্তন হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি পরিবর্তন আসবে, হতাশার কোনো কারণ নেই।’
তিনি বলেন, আমাদের সময় শিক্ষকদের একটা সম্মান ছিল। আনোয়ার উল্লাহ সাহেবরা যখন হেঁটে আসতেন, তখন শিক্ষার্থীরা মাথানত করে সম্মান জানাতো। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের বক্তব্য যখন শুনি তখন লজ্জা হয়। ৫০ বছরে আমরা এমন একটা শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করলাম যেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে আমার লোক হতে হবে। হয়তো আমার এ কথায় অনেকে কষ্ট পাবেন, কিন্তু আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমরা এরকম একটা ব্যবস্থায় চলে গেছি।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে একজন সাংবাদিক আমাকে জানালেন যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের ১৭টি নথি খোয়া গেছে। শাহবাগ থানায় ডায়েরি করা হয়েছে। এই হচ্ছে বর্তমান সরকারের শাসকদের এবং শাসন ব্যবস্থার প্রকৃত চিত্র। একটা নয়, প্রত্যেকটি জায়গায় চরম নৈরাজ্য চলছে। লক্ষ্য একটিই কিভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়। মানুষের কল্যাণ, দেশের কল্যাণের দিকে কারো নজর নেই। আমরা করোনার সময় দেখেছি, ভয়াবহ অবস্থা, মানুষের আহাজারি, সেই সময় দেখেছি কি করে তারা অর্থ উপার্জন করবেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজির ড্রাইভার চার শ’ কোটি টাকার মালিক। এই যে একটা অবস্থা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ১৬৯ জনকে এক রাতে নিয়োগ দিলেন, উদ্দেশ্য কিছু উপার্জন করা। এই যে একটা সমাজ আমরা তৈরি করেছি এই সমাজ থেকে ভালো কিছু পাওয়ার আশা করা খুব কঠিন।’
তিনি বলেন, ‘প্রফেসর আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী সাহেবের কৃতিত্ব সেই জায়গায় যে এই দুঃসময়ের মধ্যেও তিনি হতোদ্যম হননি। তিনি তার কাজ করে চলেছেন। এখানেই তার সফলতা। আমি এই গুণিজনদের অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি, কারণ তারা এখনো আমাদের আশার আলো দেখান।’
বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মনসুর মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি নেতা আ ন ম এহসানুল হক মিলন, ঢাবির সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর ইউসুফ হায়দার প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক ও কবি আব্দুল হাই সিকদার।