অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এখন জনদাবি: মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এখন জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তিনি এ কথা বলেন।
দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিন কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন শরীফ রেখে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে সারা দেশে পুজ মণ্ডপ, মন্দির, হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রতিবাদে মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
মিছিলের আগে ফখরুল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে র্যালী করে প্রেসক্লাব পর্যন্ত যাবো। কিন্তু সকাল থেকে পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করেছে। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জনগণের আন্দোলন থেকে দৃষ্টি সরাতে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্র করেছে।
তিনি বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ হাজার বছর ধরে এখানে এক সাথে বসবাস করেছে। আওয়ামি লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখন তারা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ-খৃষ্টান সবার উপর হামলা করে।
ফখরুল বলেন, আজ সরকার দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে, মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে, প্রশাসনকে দলীয় করণ করেছে। আমাদে সভা সমাবেশ করতে দেয় না। এসব করছে তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে। আমরা সব সময় দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কাজ করি আর এ সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে ক্ষমতায় এসে সংখ্যালঘুদের যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ চাই, যারা খুন হয়েছে তার বিচার চাই। আজ আওয়ামী লীগকে জনগণ ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আজ আওয়ামী লীগের পতন জনগণের দাবীতে পরিনত হয়েছে।
সকাল ১১টায় মিছিল শুরু করার কথা থাকলেও সকাল ১০টার আগ থেকে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেয় বিএনপি নেতাকর্মীরা।
বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে আসলে মূহুর্তে নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনের সড়ক লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে গোটা এলাকা প্রকম্পিত করে তুলে। খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, দিতে হবে দিয়ে দাও, লাল সবুজের পতাকায় জিয়া তোমায় দেখা যায়, জালোরে জালো আগুন জালো, এসব স্লোগান দিতে থাকে।
নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচী শেষ করে কাকরাইল মোড়ের দিকে মিছিল নিয়ে গেলে বাঁধা দেয় পুলিশ। এরপর হঠাৎ বিনা উস্কানিতেই বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও গ্রেফতার চালায় পুলিশ। এতে বেশ কিছু বিএনপি নেতাকর্মী আহত ও বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান বিএনপি।
এসময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, কৃষক দল সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।