তিউনিসিয়া সংকটের মূল হোতা মিশরের স্বৈরশাসক সিসি ও আমিরাতী যুবরাজ বিন জায়েদ!

0

তিউনিসিয়ার সংকটে মিশরের স্বৈরাচারী আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি সরকারের যোগসাজশ রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে।

মিশরের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাশিশিকে ইস্তফা দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করাতে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) মিডলইস্ট মনিটর ও মিডলইস্ট আইয়ের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাশিশি প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদের সাবেক স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, যাকে তিনি পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়া হিশাম মাশিশি গত বছর নতুন সরকার গঠন করলে কায়েস সাঈদের সাথে তার দূরত্ব বাড়ার পাশাপাশি সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে।

তখন মিশরীয় নিরাপত্তা কিংবা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কায়েস সাঈদকে অভ্যুত্থান পূর্ব অভিযান পরিচালনার জন্য ক্রমাগত পরামর্শ দিয়ে কান ভারী করে তুলে।

এমনকি মিশরীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একটি সূত্র মিডল ইস্ট আইকে জানায় যে, তাদের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি তিউনিসিয়ার কায়েস সাঈদকে সেনা অভ্যুত্থানে নিজেদের পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব দিলে কায়েস সাঈদ তৎক্ষনাৎ তা লুফে নিয়!

ওই সূত্রটি আরো জানায়, তিউনিসিয়ার সেনা অভ্যুত্থানে মিশরীয় সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের প্রেরণের পিছনে আবুধাবির যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন জায়েদের পূর্ণ সমর্থন ছিলো। তার পরিপূর্ণ সহায়তাতেই মিশরীয় সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তিউনিসিয়া গমন করেছিলো।

অপরদিকে, গত রবিবার (২৫ জুলাই) মাশিশিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সরকার ভেঙ্গে দিয়ে সংসদ বাতিল করার পর কায়েস সাঈদ যখন কারফিউর ঘোষণা দেন, তখন সহকারী প্রফেসর মার্ক ওয়েন জোন্স প্রায় ১২০০ টুইট বিশ্লেষণ করেন।

তার বিশ্লেষণে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে তা হল, ‘মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে জেগে উঠো’ মর্মে যারা আরবি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছিলো তাদের সবাই আমিরাতী এবং সৌদি ইনফ্লুয়েন্সার। আর তাদের বেশিরভাগেরই লোকেশন ছিলো মিশরে।

এর আগে এই নব্য তিউনিসীয় স্বৈরশাসক কায়েস সাঈদ মিশরের সর্বপ্রথম ও একমাত্র নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট শহীদ মুহাম্মদ মুরসী (রহ.) এর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতক জেনারেল সিসির সামরিক বিদ্রোহের ভূয়সী প্রশংসা করেন, যাকে আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি দমন-পীড়ন মূলক অভ্যুত্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

প্রসঙ্গত, রবিবার (২৫ জুলাই) তিউনিসিয়ার নব্য স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ তার প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাশিশিকে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে ডেকে নিয়ে ক্ষমতাচ্যুতিতে বাধ্য করেন। সরকার ভেঙ্গে দিয়ে সংসদ বাতিল করে দেন এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিজ কাঁধে তুলে নেন। সংসদ, রাষ্ট্রপতি ও সরকারি ভবন এলাকাগুলো মিলিটারি ট্যাংক দিয়ে ঘিরে ফেলেন।

শুধু তাই নয়, তিউনিসিয়ায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার অফিসে অভিযান চালানো হয় এবং দেশটির জাতীয় টেলিভিশনের প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়।

তাছাড়া গত সোমবার (২৬ জুলাই) দেশজুড়ে ১ মাসের কারফিউ জারি করেন।

সংসদ স্পিকার রশিদ আল ঘানুশী কায়েস সাঈদের এধরণের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে একে বিপ্লব এবং সংবিধান বিরুদ্ধ কার্যক্রম বলে আখ্যা দেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com