পশ্চিমা বিশ্বের সহানুভূতির জন্য দাড়ি টুপি পড়া মানুষদেরকে জঙ্গি সাজিয়েছে সরকার: ফখরুল
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আজকে বাংলাদেশকে যে রাষ্ট্রে পরিণত করেছে, এটি আমাদের রাষ্ট্র নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, সেজন্য আওয়ামী লীগ আজকে মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রুতে পরিণত হয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল আমরা চমৎকার একটা রাষ্ট্র গঠন করব। যে রাষ্ট্রে মানুষের অধিকার থাকবে, যে রাস্ট্র মানুষ কথা বলতে পারবে, স্বাধীন সংবাদমাধ্যম থাকবে।
গতকাল রবিবার (৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যে রাস্ট্র, সমাজ চেয়েছিলাম সেটা হবে একটা মুক্ত সমাজ, গণতান্ত্রিক সমাজ। আর অন্য কোন দেশের পরাধীন হয়ে থাকা নয়। একটি স্বাধীন সার্বভৌম মুক্ত দেশ আমরা চেয়েছিলাম। এবং সেই লক্ষ্যে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরেও এই দলটি ক্ষমতায় আছে। তারা সেদিনও ক্ষমতায় ছিল। তারা ক্ষমতায় এসে প্রথম যে কাজটি করেছে এই দেশের মেজরিটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে তারা ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে। তারা এখানে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে দেয়নি। যে সংবিধান তৈরি করেছিল, সেটাকে তারা কাটাছেঁড়া করেছে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। সেই সময় যারা ভিন্ন মত পোষণ করেছে, তাদেরকে তারা অত্যাচার করেছে হত্যা করেছে।
সংকট এখন পুরো জাতির মন্তব্য করে তিনি বলেন, অনেকেই বলেন বিএনপি’র সংকট। সংকটে বিএনপি নয়, সংকট হচ্ছে গোটা জাতি। এই কথাটা আমাদেরকে বুঝতে হবে। এবং এই কথাটিই মানুষকে বুঝাতে হবে। আজকে গণতন্ত্র নেই, নির্বাচন হয় না, কোন জবাবদিহিতা নাই, যে যেখানে পারছে চুরি করছে, ডাকাতি করছে। আইন-শৃঙ্খলা বলতে কিচ্ছু নেই। এইদেশ তো আমরা চাইনি।
ইভ্যালিসহ দশ-বারোটা প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছ থেকে বহু টাকা লুটে নিয়েছে। কিন্তু এটার আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে করতে পারেনি সরকার বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ফখরুল বলেন, আমাদের দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন। ইসলাম ধর্মের উপর তারা একের পর এক আঘাত হেনেছে। এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দাড়ি টুপি পরা মানুষ দেখলে তারা সন্দেহের চোখে বলে এরা জঙ্গি। এই জঙ্গী হিসেবে কতজনকে তারা হয়রানি করেছে তার হিসাব নেই। এই জঙ্গী শব্দ তুলে তারা পশ্চিমা বিশ্বের সহানুভূতি জন্য কাজটা করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম যোগ করেছিলাম। তিনি কাজটি করেছিলেন কারণ শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষের যে ধর্মবিশ্বাস, এটিকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য। কিন্তু এরা (সরকার) খুতবা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগের হাতে কোন ধর্মই আজ নিরাপদ নয়। তারা নিজেরাই কোন ধর্মে বিশ্বাস করে না। তাই তাদের কাছ থেকে আশা করতে পারি না, তাদের কাছে ধর্ম নিরাপদ। আজকের বাস্তবতা হচ্ছে এদের কাছ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। তাদের কাছ থেকে মুক্তি না পেলে আমরা রাষ্ট্রপতিকে রাখতে পারব না।