গুম-খুনকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে আওয়ামী নিষ্ঠুর শাসকগোষ্ঠী: মির্জা ফখরুল

0

বাংলাদেশে গুমের আতংক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলটির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে ৩০ আগস্ট ‘আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে আমি গুমের মতো ভয়াবহ ও লোমহর্ষক পরিস্থিতির শিকার মানুষদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। বাংলাদেশে গুমের আতংক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে সৃষ্টি হয় গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা। সরকারের অনুগত ব্যক্তিদের গড়ে তোলা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিরোধী দলের প্রতিবাদী নেতাকর্মী ও স্বাধীনচেতা মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া এখন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ‘তারা বিরোধী দলের মানুষদের অল্পদিন-দীর্ঘদিন অথবা চিরদিনের জন্য নিখোঁজ করে দেয়। যাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়নি, তারা জীবিত না মৃত তা অজানাই থেকে যাচ্ছে। গুম হচ্ছে একদলীয় ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের নমুনা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ। বাংলাদেশে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য গুমকে পথের কাটা দূর করার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে একের পর এক মানবতাবিরোধী অপরাধ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই নৃশংস গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, সাবেক কাউন্সিলর চৌধুরী আলম, সুমন, জাকির, মুন্না প্রমুখ। আরেকটি অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে অন্য দেশে। এসব ঘটনা দেশবাসীকে অজানা আতংকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। গুম হওয়া মানুষদের বেদনার্ত পরিবার এখনও পথ চেয়ে বসে আছে প্রিয়জনদের ফিরে আসার সম্ভাবনায়। রাষ্ট্র, সমাজে মানুষের মধ্যে ভয়, আতংক ও নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টির জন্যই গুমকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে নিষ্ঠুর শাসকগোষ্ঠী। মূল লক্ষ্য বিরোধীকণ্ঠকে নির্মূল করা, সমালোচনার অবসান ঘটানো।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গুমের অব্যাহত পরিস্থিতিতে দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়ংকর নৈরাজ্য। জনসমর্থনহীন ও ভোটাবিহীন সরকারের টিকে থাকার অন্যতম প্রধান অবলম্বনই হচ্ছে গুম। এই ধারা চলমান থাকার কারণে বাংলাদেশ অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। আসুন, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হই।

তিনি বলেন, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার, নিরপেক্ষ-গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও গণতান্ত্রিক সরকার গঠন এবং সুশাসন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হলেই গুম, অপহরণ, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর হবে, জন-জীবনে শান্তি ও স্বস্তি ফিরে আসবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com